জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আর বেচাকেনা হবে না: জিএম কাদের

বক্তব্য রাখছেন জিএম কাদেরজাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আর বেচাকেনা চলবে না। ভবিষ্যতে মনোনয়ন বাণিজ্য করতেও দেওয়া হবে না। কেউ এ অপচেষ্টা করতে চাইলে সবাইকে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে।’

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে চার দিনব্যাপী বিভাগীয় সাংগঠনিক সভার তৃতীয় দিনে জাপার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, ‘বিগত নির্বাচনে পার্টির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমার মনে হয়, নির্বাচনের সময় যারা ছিলেন তাদের কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ ছিল না পরিস্থিতির কারণে। মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল। কথা দিচ্ছি, ভবিষ্যতে এই সুযোগ থাকবে না। আমরা সবাইকে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। সামনে বিভিন্ন দল থেকে লোকজন আসবে, তাদের জায়গা দিতে হবে। তবে ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হবে না। আপনারা মতামত দিলে এক নেতার এক পদ নীতি ফলো করতে পারি।’

জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি পারিবারিক পরিচয়ে দলের নেতৃত্ব দিতে চাই না। আপনারা না চাইলে আমি নেতৃত্ব দেবো না। আমি চাই এই পার্টির মালিক হবেন আপনারা সকলে। আমি পার্টির সব কার্যক্রমে আপনাদের সম্পৃক্ত করতে চাই। আমি ক্ষমতার লোভী নই, অর্থলোভী নই। কাউকে দল বিক্রি করতে দেওয়া যাবে না। কেউ করার চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে।’

সভার শুরুতে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘শৃঙ্খলার অভাবে আমরা ৯৬ সাল থেকে ক্ষমতায় আসতে পারি নাই। এরশাদের সমর্থন না পেলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার চেহারা দেখতে পেতো না। আমাদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় এসে তারাই আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। কোনও জেলা বা উপজেলার নেতার ওপর যদি এরা হাত তোলে, তাহলে আমাদের জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

তিনি বলেন, ‘ ৯৬ সালে রাতে ষড়যন্ত্র করে দলের বারোটা বাজিয়ে নিজে মন্ত্রী হয়েছেন। আমরা আগামীতে আর কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না।’ বক্তব্য শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে স্লোগান দেন, “দুই নাগনীর একই বিষ/নৌকা আর ধানের শীষ”।

সভায় কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার নেতা জাহাঙ্গীর আলম ও জাপার ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুল আলম মাস্টার বক্তব্য দিতে দাঁড়ালে সভার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর আলমকে সমর্থন দেওয়ায় সভাস্থল থেকে জাপার কেন্দ্রীয় নেতা মাখন সরকারকে বের করে দেন পার্টির মহাসচিব। পরে শাসমুল আলম মাস্টারকে বক্তব্য সংক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন তিনি।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশিদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি, পীর ফজলুর রহমান মেজবাহ, জহিরুল আলম রুবেল, নজরুল ইসলাম বাবর প্রমুখ।