রওশনকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা একাংশের

গুলশানে জাতীয় পার্টির একাংশের সংবাদ সম্মেলন
রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির একটি অংশের নেতারা। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর গুলশানে রওশন এরশাদের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এ ঘোষণা দেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। রওশন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে রওশন এরশাদ বলেন, ‘এরশাদ সাহেব তিলতিল করে পার্টিটাকে কষ্ট করে গড়ে তুলেছেন। এখন সেই পার্টিটাকে ভালো করতে চাই।’

পুরনো যারা জাতীয় পার্টি থেকে ছেড়ে গেছেন, তাদের নতুন করে দলে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান রওশন। তিনি বলেন, ‘মান-অভিমান ভুলে দেশ ও মানুষের স্বার্থে জাতীয় পার্টির পতাকাতলে আসুন। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে জাতীয় পার্টিকে অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কাল সংবাদ সম্মেলন করে অবস্থান জানাতে পারি।’

প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর চার দিন পর ১৮ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে জিএম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। এরপর ২৩ জুলাই জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান হিসেবে অস্বীকার করে বিবৃতি দেন রওশন এরশাদসহ দলের সাত জন সংসদ সদস্য ও দুই জন প্রেসিডিয়াম সদস্য। তবে, পরবর্তী সময়ে এরশাদের চেহলাম উপলক্ষে কয়েকটি মিলাদ মাহফিলে একসঙ্গে দেখা যায় রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরকে।

সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার মনোনয়ন নিয়েও সংকট তৈরি হয়েছে জাতীয় পার্টিতে। এ নিয়ে গত দুই দিন ধরে চলছে চিঠি, পাল্টা চিঠি চালাচালির ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও সংসদ সদস্যরা দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এক পক্ষ চায়, জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করতে। অন্য পক্ষ চায় রওশন এরশাদকে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে দলীয় প্যাডে নিজেকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পদে নিয়োগ দিতে স্পিকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেন জিএম কাদের। এরপর বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) জিএম কাদেরের চিঠির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা গ্রহণ না করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেন রওশন এরশাদ।

এরশাদের জীবিত অবস্থায়ই জাপা এরশাদপন্থী ও রওশনপন্থী দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। এরশাদের মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা জিএম কাদেরপন্থী নামে পরিচিতি পান। এরশাদের মৃত্যুতে রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচন নিয়েও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রয়েছে জাপায়। রওশনপন্থীরা চান এ আসনে এরশাদের পুত্র রাহগির আল মাহিরকে (সাদ এরশাদ)। অন্যদিকে, জিএম কাদেরপন্থীরা চান এরশাদের ভাই বা স্থানীয় নেতাদের মধ্যে কেউ নির্বাচন করুক। 

আরও পড়ুন- জাপায় গৃহবিবাদ তুঙ্গে, সরকারের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় নেতারা