চলমান প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে আমরা অবশ্যই প্রশংসা করবো: গয়েশ্বর

 

বক্তব্য রাখছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন,  দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখলে আমরা অবশ্যই প্রশংসা করবো। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘নেতিবাচক কথা বলবেন না, প্রশংসা করুন’। আমরা অবশ্যই প্রশংসা করবো, যারা এই চলমান প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখবে। তিনটি লোককে গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে লাখখানেক লোককে যদি আড়াল করার চেষ্টা করা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা অসহায়। সেখানে আমরা প্রশংসা করতে পারবো না।’’

তিনি বলেন, ‘এদেরকে আইনের আওতায় এনে, এদের থেকে প্রাপ্ত অর্থ যদি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যায়, অবশ্যই ধন্যবাদ দেবো। কিন্তু প্রশ্ন হলো— এটা কি সরকারের উদ্যোগ, নাকি দেশপ্রেম থেকে দুঃসাহসিকভাবে উদ্যোগ। এই গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে যারা দুর্নীতির লাগাম ধরতে চান, তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। তাদেরকে সহযোগিতা করার সদিচ্ছা আমাদের আছে। কিন্তু সরকারের নাটকের অংশ হিসেবে যদি হয়, তাহলে আমরা কোনও সহযোগিতা করতে পারবো না।’

এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘‘ওবায়দুল কাদের এটাকে বলছেন, ‘ইমেজ রিকভারি'। তার মানে হলো পচন ধরছে— এন্টিবায়োটিক। ওবায়দুল কাদের চাইলে নিজেই নিজেদের সহায়তা করতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছে গ্রেফতারকৃতরা বিএনপি করতো। যদি বিএনপি করে থাকতো সে সময়, তো তাদের পকেটে ১০ টাকাও ছিল না। আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পরে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। এতদিন ঢাকার ঐতিহ্য ছিল মসজিদ, এখন হলো ক্যাসিনোর শহর ঢাকা।’’

একটা ক্যাসিনো তৈরি করতে ২-৪ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হয় এমনটি দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, ‘এই পানের দোকানে, একটা ঘরের মধ্যে এগুলো ক্যাসিনো না। এগুলো এক ধরনের ফটকাবাজি এবং টাকাগুলোকে এক জায়গায় নেওয়া। এছাড়া, আর কিছুই না। যাদের ধরা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা বাহিনীর হয়তো বিব্রত বোধ করছে অনেকের নাম চলে আসায়। আমি অনুরোধ করবো, প্রত্যেকের নাম পত্রিকার পাতায় ছাপিয়ে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হোক। জনগণ এগুলো জানতে পারলে আপনাদের পাশে থাকবে।’

সরকার পদত্যাগ করেও সহযোগিতা করতে পারে এমন দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে খারাপ লোক আছে, কিন্তু ভালো লোকের তো অভাব নাই। তারা যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাহলে জনগণকে দুর্নীতি, দুঃশাসন, লুটপাট, সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করতে পুলিশবাহিনী একাই পারবে। যতগুলাই ক্যাসিনো থাকুক এটা কিন্তু জাতির কাছে একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি নয়। সারাদেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় আছে। সে কারণে সবচেয়ে ভালো সহযোগিতা হয় আপনারা যদি পদত্যাগ করেন।’

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ।