ভোট ডাকাতির স্বৈরাচার বাংলাদেশেই প্রথম: রব

 

প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভায় আ স ম আবদুর রব ও অন্য অতিথিরাদেশের স্বাধীনতা চুরি হয়ে গেছে এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। তিনি বলেছেন, ‘স্বৈরাচার দুই রকমের আছে। একটা হচ্ছে সামাজিক স্বৈরাচার, আরেকটা হচ্ছে সিভিল স্বৈরাচার। স্বৈরাচার পৃথিবীতে ছিল, আছে, হয়তো ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখে ডাকাতি করে—এ ধরনের স্বৈরাচার আমি পৃথিবীতে দেখি নাই। এই স্বৈরাচার পৃথিবীতে প্রথম এসেছে বাংলাদেশে।’

বুধবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ মহিলা বিজ্ঞান সমিতি আয়োজিত 'ছাত্র রাজনীতি: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

রব বলেন, ‘এই স্বৈরাচার স্বাধীনতা খুন করছে, সংবিধান খুন করছে, ন্যায়-নীতি খুন করেছে, বিচার বিভাগ খুন করেছে। এই খুনের বিচার হওয়া দরকার। ছাত্র রাজনীতি যারা বন্ধ করেছে, তাদের অত্যন্ত নির্মমভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। আপনাদের (আওয়ামী লীগ) পরিণতি কী হবে আমি তা জানি না। তবে আপনাদের পরিণতি যে ভয়াবহ এটাতে সন্দেহ নাই। আমরা ছাত্র রাজনীতি চাই। ছাত্র রাজনীতি দেশের জনগণ চায়।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে ‘নির্লজ্জ’ অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘এত ঘটনার পরও যদি দোষ প্রমাণিত না হয়, তবু নৈতিক কারণে আপনি এখনও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে থাকেন কী করে? আপনার লজ্জা করে না?’
রব বলেন, ‘খালেদা জিয়ার দুই কোটি টাকার মামলা এখন ৯ কোটি টাকা হয়েছে। কত কোটি কোটি টাকা প্রতিদিনই লুটপাট করছেন, বিদেশে পাচার করছেন জুয়া খেলার মাধ্যমে তার হিসেব নাই।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদেরও ক্ষমতা থেকে যেতে হবে। যাওয়ার রাস্তাটা ঠিক করেন কীভাবে যাবেন। রাষ্ট্রকে অকার্যকর করে দিয়েছেন আপনারা। আপনাদের এই স্বৈরাচারকে আজ ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। আপনারা ভদ্রভাবে চলে যান। না হলে আপনাদের কীভাবে যাওয়াতে হয়, দেশের যুবসমাজ তা জানে।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘পাকিস্তানের সময়ে আইয়ুব খানও জিডিপি ও উন্নয়নের কথা বলতো। সারা পাকিস্তানজুড়ে উৎসব পালন করতো। কিন্তু তিনি টিকে থাকতে পারেন নাই। কোনও স্বৈরাচারী এই দেশে টিকতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা দেশে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কথা বলবে, চালের মূল্য বৃদ্ধি হলে কথা বলবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হলে কথা বলবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা কি বলতে পারবে না? যদি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলতে না পারে, তাহলে কী তিনি জেলে ধুঁকে ধুঁকে মরবেন? না, ওই রকম ছাত্র রাজনীতি আমাদের দেশে কখনও হয়নি। আমাদের দেশে ছাত্ররা ৫২ ও ৭১ আন্দোলন সফল করেছে। যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র হরণ হবে, ততদিন পর্যন্ত ছাত্ররাই ভ্যানগার্ড হয়ে থাকবে।’
আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. শাহিদা রফিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বর্তমান ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ বক্তব্য দেন।