বাংলাদেশে সৎ পথে কোটি টাকা আয় করা সম্ভব না উল্লেখ করে শাহদীন মালিক বলেন, ‘কোটিপতিদের নির্বাচনে গরিবদের দুঃখ নিয়ে কথা বলা অনেক সহজ। তবে এই দুঃখ-দুর্দশা তাদের গায়ে লাগে না। এ কারণে আমরা কোটিপতিদের প্রতারণামূলক নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আর দেশে গণতন্ত্রহীনতা, কর্মহীনতা আরও বাড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি একটা কথা বলার লোভ সামলাতে পারছি না। সিটি নির্বাচনের উত্তর ও দক্ষিণের মেয়র পদের প্রধান চার জনের (আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীরা) মধ্যে একটা কমন বিষয় রয়েছে। তারা যেকোনোভাবেই কোটিপতি। তারা শিল্পপতি কোটিপতি, অন্যান্য বিভিন্নভাবে কোটিপতি। তারা প্রচার-প্রচারণার সময় বিভিন্ন বস্তি এলাকায় যান। কিন্তু দেখেন, আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র আজ কোথায় গেছে!’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) সমালোচনা করে শাহদীন মালিক বলেন, ‘ইভিএম চাচ্ছে কে? সরকার ও নির্বাচন কমিশন। সরকার ও নির্বাচন কমিশন খুব ভালো। প্রতি নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য তারা নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করে। ২০১৪ সালে গন্ডগোল লাগিয়ে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেলেন। এটা তো স্পষ্ট যে ২০১৮ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করা যাবে না। তখন তারা বের করলো অন্য উপায়। আগের দিন ভোট শেষ করে ফেললো। এখন আমরা এটাও জেনে গেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে রাতে ৩-৪টায় ভোট দেওয়া শুরু করলে আর কেউ না হোক সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে যাবেন। অতএব এবার তাদের আরেকটি নতুন পন্থা উদ্ভাবন করতে হয়েছে। এই একটা কাজে স্পষ্ট, সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনগুলো বিশেষ পারদর্শিতা দেখাচ্ছে। এখন ইভিএম হলো প্রতারণার নতুন পদ্ধতি। এতে আমাদের একটু সন্দেহ আছে, বুঝতে পারছি যে এখানে প্রতারণা হবে। ঠিক কীভাবে ধরবো, কীভাবে করবো, সেটা বুঝে উঠতে পারছি না। এই নির্বাচন হয়ে গেলে, আমরা বুঝে উঠতে পারবো। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, পরের নির্বাচনে প্রতারণার আরেকটি নতুন পদ্ধতি আসবে।’
ঢাকা শহরের অধিকাংশ নাগরিক এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন মন্তব্য করে শাহদীন মালিক বলেন, ‘আমরা বেশিরভাগ লোকেই জানি এখানে কারচুপি হবে। আর ইভিএমের বিষয়ে দিন দিন যেহেতু সংশয় বাড়ছে, এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই ভোট হয়ে যাবে। ভোটের দিন অল্প সংখ্যক ভোটার উপস্থিত হবে।’
ভোটাধিকার হরণ ও ভোট দেওয়া থেকে বিরত রাখতেই সরকার ও নির্বাচন কমিশন ইভিএমের ব্যবহারে অনড় বলে অভিযোগ করেন তিনি।