সরকার অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত, করোনায় উদাসীন: মোশাররফ

কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন

বর্তমান সরকার মুজিববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত,  করোনা ভাইরাস নিয়ে উদাসীন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার গত বছরের ডেঙ্গুর ব্যাপারে সঠিক তথ্য দেয়নি। তেমনই করোনা নিয়েও সরকার সঠিক তথ্য দিচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ‘করোনা ভাইরাস: বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক বৈজ্ঞানিক কর্মশালা ও সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সরকার মুজিববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত, করোনা ভাইরাস নিয়ে উদাসীন। বলা হচ্ছে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে তিন জন আক্রান্ত। কিন্তু আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখছি তিন জন নয়, অনেক বেশি আক্রান্ত।’

তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জল এবং স্থলবন্দরগুলোতে যে প্রিভেনটিভ ম্যাটারগুলো দরকার সরকার তা করছে না, করতে পারছে না। ইতোমধ্যে ১২১টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে। করোনা ভাইরাসের এখনও কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বাংলাদেশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে আছে।’

তি‌নি ব‌লেন, ‘সরকার এখনও করোনা ভাইরাস নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমার পরিচিত একজন বিদেশ থেকে এসেছেন, তাকে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়নি বিমানবন্দরে। আমি নিজেও দেখেছি কাউকে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। নদী এবং সমুদ্র বন্দরগুলোতেও কোনও স্ক্যানিং ব্যবস্থা করা হয়নি। অথচ সরকার বলছে আতঙ্কের কিছু নেই, সব ব্যবস্থা আছে। কিন্তু বিশেষ কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড‌্যাব) এর পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। প্রস্তাব গুলো হচ্ছে— করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় কমিটিতে মন্ত্রী, এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দলমত নির্বিশেষে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের যেমন, প্রকৌশলী, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক ইত্যাদি পেশাজীবীদের সংশ্লিষ্ট করা, দেশের অভ্যন্তরে করোনা ভাইরাসের অনাকাঙ্ক্ষিত অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কার্যকরী ‌স্ক্রিনিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে বিস্তারিতভাবে দেশের জনগণকে অবহিত করা, যথাযথ চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তুতি সম্পর্কে অনতিবিলম্বে জনগণকে অব‌হিত করা হোক, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেকে ও চারপাশের মানুষকে মুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে দেশের সর্বস্তরের জনগণকে অবহিত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী গণসচেতনতামূলক কর্মসূচি অনতিবিলম্বে শুরু করা এবং করানা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী চিকিৎসক ও নার্সদের প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্টের কোনও অস্তিত্ব আমাদের দেশে দৃশ্যমান নয়, যা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী তা আমরা জানতে চাই এবং অবিলম্বে তা সংগ্রহ করা।