করোনা নিয়ে ‘লুকানোর পলিসি’ নিয়েছে সরকার, অভিযোগ রিজভীর

received_5করোনাভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পলিসি জনগণের কাছে একদম পরিষ্কার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “সরকারের পলিসি হচ্ছে ‘নো কিট, নো করোনা; নো টেস্ট, নো করোনা; নো পেশেন্ট, নো করোনা’। যে পলিসি করে ইরান ও ইতালি সরকার তাদের দেশের সর্বনাশ করেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব থেকে। আমরাও সেই লুকানোর পলিসি দিয়েই সবকিছু ম্যানেজ করতে চলেছি।”
সোমবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
উল্টো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকারের এই ‘লুকানোর পলিসি’ যাতে কেউ প্রকাশ না করতে পারে, সেজন্য নানা রকমের অপচেষ্টা চলছে বলেও দাবি করেন রুহুল কবির রিজভী। তার ভাষ্য, “সরকার এই ‘লুকানোর পলিসি’র নাম দিয়েছে ‘গুজব’।”
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, দুই মাস সময় পেলেও সরকার সমস্যার দিকে কোনও মনোযোগ দেয়নি। উপদ্রুত দেশগুলো থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনকারী প্রবাসী ভাইবোনদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুসরণে কোয়ারেন্টিনে রাখার সরকারি ব্যর্থতা প্রমাণ করে যে, সমন্বয়হীনতা ও প্রস্তুতির অভাব দেশকে কত বড় বিপদে ফেলতে পারে। মহাবিপদ মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি নেই, সমন্বয় নেই, আক্রান্ত রোগী শনাক্তকরণের পর্যাপ্ত উপকরণ ও ব্যবস্থাপনা দেশে নেই। নেই চিকিৎসকদের রক্ষার ব্যবস্থা, নেই যথেষ্ট মাস্ক, স্যানিটাইজার ও ভেন্টিলেটর। পরীক্ষার ব্যবস্থা ছাড়া সরকার আক্রান্ত সংখ্যার যে তথ্য দিচ্ছে, তা বিশ্বাসযোগ্যতা পাচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে টানা দুই দিন বলা হচ্ছে, দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত নেই। অথচ পত্রপত্রিকা, টেলিভিশনসহ মিডিয়া প্রতিদিন সর্দি, জ্বর, কাশিতে মারা যাওয়ার খবর দিচ্ছে।’
করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যুর সংবাদ সোমবারের পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘জাতির মহাবিপদের মুহূর্তে দুর্যোগ মোকাবিলার কোনও সমন্বিত উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো বাস্তবতা অস্বীকার করে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে সরকারের মিথ্যা সাফল্যের বন্দনায় মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য জনগণকে গভীরভাবে চিন্তিত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে।’
বিদেশ থেকে দেশে ফেরা মানুষের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন পথে ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৩ জন দেশে প্রবেশ করেছেন। শেষ দুই সপ্তাহে এসেছেন পৌনে ২ লাখ মানুষ। এছাড়া এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআরের (রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান) হট নম্বরগুলোয় সহায়তা চেয়ে ফোনকল এসেছে ৮ লাখ ২ হাজার ৫৮০ জনের। এ পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭৬ জনের। বাকি লোকদের ভেতর কতজন আক্রান্ত তা কেউ বলতে পারছে না।’