মুক্তিযোদ্ধা শ্রমিকনেতা আতিউল ইসলামের দাফন সম্পন্ন

মুক্তিযোদ্ধা শাহ আতিউল ইসলামট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা শাহ আতিউল ইসলামের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) গণসংহতি আন্দোলন পক্ষে থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২২ অক্টোবর ভোর ৩টা ৩০ মিনিটে ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সংগ্রামী সভাপতি এবং খুলনা অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ আতিউল ইসলাম করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এরপর সাড়ে ১১ টায় তার ঢাকার গোপীবাগের বাসায় মরদেহ নেওয়া হলে স্থানীয় মানুষ ও তার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর পাশের মসজিদে তার প্রথম জানাজা হয়। বিকালে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

মৃত্যুকালে আতিউল ইসলামের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। এই মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ১৯৭১ সালে খুলনা ও যশোর অঞ্চলে সরাসরি যুদ্ধ করেন। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে পড়াশোনা করেছেন খুলনা জেলা স্কুল এবং বিএল কলেজে। ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে পড়াকালে ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন) দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু। মোনায়েম খান বিরোধী লড়াইয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে গিয়ে মামলায় পড়াশোনা আর শেষ করা হয়নি। ১৯৬৪ সালে খুলনায় ‘শ্রমিক কর্মী সংঘে’ সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। শ্রমিক আন্দোলনের আরেক কিংবদন্তি নেতা ডা. সাইফ-উদ-দাহার ও শাহ আতিউল ইসলাম মিলে খুলনার পাটকলগুলোর শ্রমিকদের মধ্যে রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। তখন থেকেই ডা. সাইফ-উদ-দাহারের সঙ্গে মিলে সারাদেশে শ্রমিকদের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রতিষ্ঠা, আইয়ুব শাহির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয়া ভূমিকা রাখেন তিনি। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন শাহ আতিউল ইসলাম। বৃহত্তর মুক্তি সংগ্রামের জন্য গঠন করেছিলেন ‘কমিউনিস্ট কর্মী সংঘ’।

শ্রদ্ধা নিবেদন১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে কমিউনিষ্ট কর্মী সংঘের নেতাকর্মীরা দেশের ভেতরেই খুলনা যশোরের শার্শা, নাভারন, দেওহাটা, ঝিকরগাছা নড়াইলে বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ লড়াই করেন। শাহ আতিউল ইসলাম মুক্তির সংগ্রামের সেই লড়াইয়েও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

পরবর্তীতে তিনি ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই দ্বায়িত্বেই ছিলেন।

তার কবরে পুস্পস্তবক নিবেদন এবং শ্রদ্ধা জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখতার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, আবু বকর রিপন, মনিরউদ্দীপ পাপ্পু, জুলহাসনাইন বাবু, কেন্দ্রীয় সদস্য দীপক রায় এবং বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সহসাধারণ সম্পাদক আলিফ দেওয়ান প্রমুখ।