সাক্কুর পরিবারের আছে ২৪টি ফ্ল্যাট

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি থেকে সদ্যবহিষ্কৃত মনিরুল হক সাক্কু ও তার পরিবারের ফ্ল্যাটের সংখ্যা ২৪টি। নিজ শহর কুমিল্লা ও রাজধানী ঢাকায় এসব ফ্ল্যাট রয়েছে। রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে রয়েছে তাদের ৪টি ফ্ল্যাট। এর প্রত্যেকটির আয়তন গড়ে সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট। এছাড়া রাজধানীর কয়েকটি আবাসন কোম্পানিতে রয়েছে ৫টি প্লট, এতে তাদের জমির পরিমাণ ২২ কাঠা।

আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে সকল প্রার্থীর হলফনামা আপলোড করা হয়েছে।

সাক্কুর সম্পদের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে— তার চেয়ে তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তি বেশি। অবশ্য স্ত্রীর তুলনায় বেশি সাক্কুর অস্থাবর সম্পত্তি।

হলফনামায় দেখা গেছে— কুমিল্লার ফাতেমা জাহানারা টাওয়ারে সাক্কুর ১৬৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। একই টাওয়ারে ১৮৪০ বর্গফুটের একটি ও ১৯০ বর্গফুটের একটি দোকান আছে। কান্দিরপাড়ের সাত্তার খান কমপ্লেক্সে একটি দোকান রয়েছে। তবে এর আয়তন হলফনামায় উল্লেখ করেননি। সাক্কুর রাজধানীতে বসুন্ধরায় তিন কাঠা, মধুমতি মডেল টাউনে পাঁচ কাঠা, স্বদেশ প্রপার্টিজে পাঁচ কাঠা করে দুটি প্লট রয়েছে। কুমিল্লা সদরের বজ্রপুরে যৌথ মালিকানাধীন ৬ শতকের প্লটের ২/১৭ অংশ এবং ১৭ শতকের ২/১৭ অংশ অকৃষি জমি রয়েছে। এ জায়গাটিতে বর্তমানে ডেভেলপার কোম্পানি ভবন নির্মাণ করছে। সাক্কুর নিজের নামে কুমিল্লার শরিফপুর মৌজায় ২৩৫ শতক (২০ একরের ২/১৭ অংশ) ও লালমাই মৌজায় ২৫০ শতক কৃষি জমি রয়েছে।

সাক্কুর স্ত্রীর নামে ঢাকার গুলশানে ৩৮২৭ বর্গফুট, ৩৩৭৩ বর্গফুট, ৩৩১৭ বর্গফুট ও ৩৩৯০ বর্গফুটের চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে কুমিল্লা শহরে ২৩ শতাংশ জমিতে নির্মাণ করা ভবনের তৃতীয় তলার দুটি ফ্ল্যাটে রেস্ট হাউজ ও রেস্টুরেন্ট এবং দ্বিতীয় তলায় ৭২৫৬ বর্গফুটের একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। তার নামে ঢাকার ধানমন্ডির আরচার্ড পয়েন্টে ৬৬৩ বর্গফুটের তিনটি দোকান রয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা সদরের বজ্রপুরে ৫ শতক ও ১৩ শতকের দুটি প্লটে ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। এই জায়গা থেকে তিনি ১৭টি ফ্ল্যাট পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ আছে। সাক্কুর স্ত্রীর নামে রাজধানীর বসুন্ধরায় ৩ কাঠার একটি প্লট রয়েছে। এছাড়া গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ি উপজেলার মনোহরপুরে রয়েছে তার ১২৩ শতক কৃষি জমি।

সাক্কুর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে— হাতে নগদ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯২ টাকা, ব্যাংকে জমা দুই লাখ ৯৪ হাজার ২৭ টাকা, কোম্পানির শেয়ার দুই লাখ টাকার, স্থায়ী আমানত ৫০ লাখ টাকার, ১০ ভরি সোনা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৪৭ হাজার টাকার এবং আসবাবপত্র এক লাখ টাকার।

এদিকে তার স্ত্রীর হাতে নগদ ৯৯ লাখ ১৩ হাজার ৮২১ টাকা, ব্যাংকে জমা ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৭৫৭ টাকা, স্থায়ী আমানত ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩৬৪ টাকার এবং ১০ ভরি সোনা রয়েছে। সাক্কুর ল্যান্ড ক্রুজার পাজেরো জিপ এবং তার স্ত্রীর একটি পাজেরো জিপ রয়েছে। তবে হলফনামায় গাড়ি দুটির মূল্য উল্লেখ নেই।

মনিরুল হক সাক্কু পরপর দুইবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৭ সালে তিনি বিএনপির মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন। তবে, এবার বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।