সতর্ক অবস্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা

উত্তাপ ছড়িয়ে আজ শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত থেকে শহরের অলিতে-গলিতে, সংযোগ সড়কের মোড়ে মোড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগকে। শনিবার সকাল থেকেও একইভাবে অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি খণ্ড খণ্ড মিছিল এবং সতর্ক থাকা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরের নেতারা জানিয়েছেন, প্রতিটি ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা এবং স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতিও একই নির্দেশনা রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরেও নেতকর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

এ বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বুধবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়ানোর পর বৃহস্পতিবার থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে সভা-সমাবেশের নামে তারা যাতে সহিংসতা ছড়াতে না পারে; আগুন সন্ত্রাস, হানাহানি করতে না পারে, সেজন্য আমরা মাঠে থাকবো শনিবারও। বিএনপিকে রাজনৈতিভাবে মোকাবিলা করতে সারা দেশে সতর্ক আছি আমরা।’

শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ওয়ার্ড, থানার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। শনিবারও একইভাবে মাঠে থাকবেন তারা। এ ছাড়া ঢাকার প্রবেশমুখ, জিরোপয়েন্ট, গুলিস্তান, সায়দাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কল্যাণপুর, হাতিরপুল, জিগাতলা ও রাসেল স্কয়ার, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, আজিমপুর, সদরঘাট, সুত্রাপুর, শনির আখড়া, ধোলাইপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় থাকবেন তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী বলেন, ‘ইউনিট থেকে ওয়ার্ড, থানা থেকে মহানগর– সব স্তরের আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবেন। শুক্রবারের সমাবেশ এবং তার আগের যৌথ সভা থেকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইলে রাজপথে মোকাবিলা করা হবে।’

জগন্নাথ

যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির পূর্বঘোষিত সমাবেশকে কেন্দ্র রাজপথে সতর্ক অবস্থানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় ছিলেন তাদের নেতাকর্মীরা। শনিবারও একইভাবে রাজপথে থাকবেন তারা। বিএনপির নেতাকর্মীরা সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে বলে জানান তারা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন জানান, শুক্রবার থেকেই তাদের নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছেন। শনিবারও মাঠে থাকবেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা যাতে সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারেন সে জন্য সতর্ক পাহারায় থাকবো আমরা।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য আগেই বলেছেন, ওয়ার্ড, থানা ও মহানগর কমিটির নেতাকর্মীরা রাজপথে সতর্ক পাহারায় থাকবেন। বিএনপি সহিংসতার পথ বেছে নিলে বা যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির প্রেসিডিয়ামে নেতাদের সঙ্গে সহযোগী সংগঠনগুলোর যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় শুক্রবার সকাল থেকেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থান নিতে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের। বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার ক্ষেত্রে তারা কোনও ছাড় দেবেন না বলেও নির্দেশনা এসেছে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছ থেকে।

শুক্রবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা রাজপথে সতর্ক পাহারা দেবে। বিএনপি সমাবেশে লাঠি বা আগুন নিয়ে আসলে “খেলা হবে”। সবাইকে প্রস্তত থাকতে হবে। সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। অনেক ছাড় দিয়েছি, আর ছেড়ে দেবো না।’