পুরনো এনালগ পলিটিশিয়ান দিয়ে, ডার্টি করাপটেড ওল্ড জেনারেশন লিডারশিপ দিয়ে এই দেশের পরিবর্তন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
বুধবার (১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদ আয়োজিত শ্রমিক র্যালি ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, এই রাষ্ট্র গুটিকয়েক সুবিধাভোগী দুর্বৃত্তের হাতে এখন জিম্মি। তারাই রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত এই দেশে নতুন একটা বিপ্লব, একটা রেনেসাঁ না হয় ইউরোপের মতো, ততক্ষণ পর্যন্ত কার্যত এই রাষ্ট্রের পরিবর্তন হবে না। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছে, তাদের আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। জনগণ জান দেবার জন্য রাস্তায় এসেছিল, কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তিরা তা কার্যকর রূপ দিতে পারেনি। তাই বলছি, পুরনো এনালগ পলিটিশিয়ান দিয়ে, ডার্টি করাপটেড ওল্ড জেনারেশন লিডারশিপ দিয়ে এই দেশের পরিবর্তন হবে না। নতুন পরিবর্তনের জন্য নতুন শক্তির জাগরণ ঘটাতে হবে। সেই জাগরণ হবে কৃষক-শ্রমিকের নেতৃত্বে।
দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিস্থিতি উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আমাদের রাষ্ট্রপতি কিছুদিন আগে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। একটা দেশের রাষ্ট্রপতি যদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেয়, প্রধানমন্ত্রী যদি লন্ডনে চিকিৎসা নেয়— তাহলে সেই দেশের জনগণ কোথায় চিকিৎসা নেবে? রাষ্ট্রের টপ ব্যক্তিরা বিদেশে চিকিৎসা নেয়, আর আমার আপনার মতো ফকির-গরিব, যারা রাস্তায় চিল্লায়, তাদের জন্য এই রাষ্ট্রের চিকিৎসা।
শুধু রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী না, বিরোধী দলের নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও কয়েক দিন আগে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা করিয়েছেন, এমপি-মন্ত্রীরাও যাচ্ছেন। আমরা তাহলে কই যাবো ? আমরাতো এমপি-মন্ত্রী ছিলাম না, যে দুই নম্বরি করে মাল-পানি কামিয়েছি। তাহলে আমাদের তো চিকিৎসা নিতে হবে দেশে। তার মানে উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ। দেশটা চলছে উল্টো দিকে। আর এই উল্টো দিক থেকে ঘুরে রাষ্ট্র পরিচালনা করার জন্য শ্রমিক কৃষক সাধারণ মানুষকে রাজনীতিতে এগিয়ে আসতে হবে।
শ্রমিক নেতাদের সমালোচনা করে নুর বলেন, রানা প্লাজা ও তাজরিন ফ্যাশনের ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণকারী কয়েকশ শ্রমিক যাদের পা নাই, হাত নাই তারা এখনও কোনও পুনর্বাসন, আর্থিক সহযোগিতা পাযন নাই। তাহলে ঢোল বাজানো শ্রমিক সংগঠনের কাজ কী? আমাকে অনেকে বলেছেন— এই শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে তারা (শ্রমিক নেতারা) শ্রম ভবনে দেন- দরবারে বসেন। শ্রমিক নেতাদের ঢাকা শহরে দুই-তিনটা বাড়ি, তারা পাজেরো- ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি নিয়ে ঘোরেন। শাজাহান খানের মতো মানুষ কীভাবে শ্রমিক নেতা হন? যিনি হাজার কোটি টাকার মালিক। তার বাথরুম থেকে রান্নাঘরে সব জায়গায় এসি লাগানো। তিনি শ্রমিকদের দুঃখ কষ্ট কীভাবে বুঝবেন?
বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।