‘প্রতিদিন বাড়ছে জিনিসের দাম, জনগণের পরোয়া করে না সরকার’

সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারের পতন হবে। সেই পতনের অংশীদার হবো আমরা।’ 

আগামী শনিবার দেশের সব ইউনিয়নে পদযাত্রা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কর্মসূচি দিলেই এই সরকার বাধা দেয়। আমরা দেখতে চাই, সারা দেশের কয়টি ইউনিয়নে তারা বাধা দিতে পারে। সব ইউনিয়নের সব নারী-পুরুষ পদযাত্রায় অংশ নেবেন।’

শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে চট্টগ্রাম বিএনপির নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহমদ সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের ‘উসকানিমূলক পাল্টা’ কর্মসূচির প্রতিবাদে এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে সমাবেশ করে বিএনপি।

আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি অভিযোগ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ভবিষ্যতেও তারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে চায় না। তারা যদি আগামীতে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে চাইতো, তাহলে জনগণকে কষ্ট দিতে পারতো না। তারা আবারও ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসতে চায়।’

আমরা একবার বাকশালের গোরস্থানের ওপর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে গণতন্ত্র পেয়েছিলাম দাবি করে তিনি বলেন, ‘পরে স্বৈরাশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে খালেদা জিয়ার হাত ধরে গণতন্ত্র পেয়েছিলাম। এবার আমরা তারেক জিয়ার হাত ধরে এই সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো। বিএনপি বারবার বিজয় হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে। এবারও করবে।’

সরকার জনগণের পরোয়া করে না উল্লেখ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যারা হালাল উপার্জন করেন, সে শ্রমিক, কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ আজ চলতে পারছে না। প্রতিদিন জিনিসের দাম বাড়ছে। এই সরকারের তাতে কোনও পরোয়া নেই। তিন সপ্তাহের মধ্যে দুবার জ্বালানির দাম বেড়েছে। যদি এই সরকার জনগণের পরোয়া করতো তাহলে এটা করতে পারতো না।’

সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানকে লঙ্ঘন করে আবার সেটা প্রয়োগের কথা বলছে। দেশে আজকের চলমান পরিস্থিতির ওপরে এই সরকারের পতনের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। তাই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন আরও গতিশীল করতে হবে। আমরা একটা মহাযুদ্ধের মধ্যে আছি। এই যুদ্ধে আমাদের জিততে হবে। এই যুদ্ধ গণতন্ত্রের লড়াইয়ের যুদ্ধ, মানুষের ভোটের যুদ্ধ। দেশের মানুষ আজ না খেয়ে আছে। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার সু্যোগ-সুবিধা নেই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মীর মো. নাছির উদ্দিন বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেন তারা মিছিল করলে আমরা নাকি পালানোর জায়গা পাবো না। আজ এসে তিনি দেখে যাক মানুষের এই জনসমুদ্র। আমরা যদি ঘোষণা দিই আজ থেকে বাংলাদেশ বন্ধ তাহলে আপনাদের সে ক্ষমতা নেই আবার চালু করার। তারা নাকি স্মার্ট বাংলাদেশ করবে! দূর্নীতিবাজদের মুখে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা মানায় না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আবার ফিরিয়ে আনতে আরেকটা গণ অভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। সে ডাক আসবে। তখন সব অচল হয়ে যাবে।

সমাবেশে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘গাছের ফল যখন পচে যায় তখন সেটা ঝরে পড়ে। আওয়ামী লীগ আজ পচে গেছে। মানুষের হৃদয়ে তাদের আর জায়গা নেই। জনগণ আর তাদের চায় না। ক্ষমতায় আর আপনারা যেতে পারবেন না। ভোটারবিহীন সরকার দেশ পরিচালনা করতে পারে না। আমরা আন্দোলনে নেমেছি। সে আন্দোলন বানচাল করতে অনেক পাঁয়তারা করছেন। সেটি আর আমরা করতে দেবো না।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম।