দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে এত নিচে গেলো? প্রশ্ন জিএম কাদেরের

এবারের বাজেটে সাধারণ মানুষের স্বার্থের চেয়ে আইএমএফের শর্তকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

রবিবার (২৫ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জি এম কাদের এ কথা বলেন।

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, আইএমএফের কাছ থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ নিচ্ছে তা খুব বেশি নয়। কিন্তু তাদের শর্ত অনেক, ৩০টি। বিভিন্ন খাতে তারা ভর্তুকি কমাতে বলেছে। এগুলো বেশিরভাগ গরিব মানুষের স্বার্থের পরিপন্থি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে এত নিচে গেলো যে এই ঋণ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ মরিয়া হয়ে গেছে। করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে কিছু মন্দা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কারও কি এমন দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে?

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। ডলারের দাম বেড়েছে। সব জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সার্বিক অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।

জি এম কাদের বলেন, মুডিস (ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা) বাংলাদেশের ঋণ মান কমিয়ে দেওয়ায় দেশের জন্য বৈদেশিক ঋণ আহরণ কঠিন হয়ে গেছে। টাকা ছাপিয়ে অর্থায়ন করতে হচ্ছে। এতে মুদ্রাস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। এখনই জনগণ দিশেহারা, সামনে চাপ আরও বাড়বে। তিনি মনে করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এখন চ্যালেঞ্জ। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে রাখবেন। এটা হাস্যকর। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজেটে কোনও দিকনির্দেশনা নেই। এবার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি ধরা হয়েছে। এটা বাস্তবসম্মত নয়।

তিনি বলেন, গার্মেন্ট, প্রবাস আয় ও কৃষি এই তিনটি খাত দেশের অর্থনীতিকে ধরে রেখেছে। কিন্তু এসব ক্ষত্রে উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট কিছু বাজেটে নেই।

আয় না থাকলেও টিন নম্বর থাকলে ২ হাজার টাকা রিটার্ন দিতে হবে, এমন বিধানের সমালোচনা করে বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, একদিকে এই কর চাপানো, অন্যদিকে ধনীদের সারচার্জের সীমা বাড়ানো হলো।

জি এম কাদের বলেন, সঠিক হিসাব করলে খেলাপি ঋণ ৩ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এ বিষয়ে কোনও সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিদ্যুতে লুটপাট বন্ধে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।