বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনও ষড়যন্ত্র করছে: ওবায়দুল কাদের

বিএনপির নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘তারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে আঘাত হানতে চায়। সবাইকে সতর্ক থেকে তাদের মোকাবিলা করতে হবে।’

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সর্বকালের সেরা বাঙ্গালি আমাদের আদর্শের পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর স্মৃতি অবনত চিত্তে স্মরণ করছি আজকের এই ১৫ আগস্টে। এই রক্তাক্ত বিদায় বাংলাদেশকে অনেক পিছনে ঠেলে দিয়েছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে ৫০ বছর অর্জন ও উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর এ হত্যাকাণ্ড সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার সম্ভাবনার ওপর চরম আঘাত। সেদিন শুধু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে বঙ্গমাতা এবং পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়নি, সেদিন তারা হত্যা করেছিল বাংলাদেশের মহান গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধকে।’

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই ছিল তাদের টার্গেট উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের রণধ্বনি জয় বাংলা, স্বাধীনতার আদর্শ ছিল তাদের টার্গেট। সেটা পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড এবং সবশেষ ২১ আগস্টে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রাইম টার্গেট করে যে হামলা পরিচালিত হয়; সবই আসলে একইসূত্রে গাঁথা, একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা।‘ 

বাংলাদেশ আজও ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তি পায়নি বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যদি না হারাতাম তাহলে এতদিনে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে সারাবিশ্বে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত হতো। কিন্তু বঙ্গবন্ধু আমাদের যে রাজনতিক স্বাধীনতা, যে উত্তরাধিকার দিয়েছেন এই জনপদে কোনোদিন তার মৃত্যু হবে না। এরপর বঙ্গবন্ধুর সৌভাগ্যক্রমে যে অসমাপ্ত কাজ, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ সৃষ্টির নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অসীম সাহসী কান্ডারি হিসেবে আমাদের দেশকে উন্নয়নে-অর্জনে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ আমাদের শত্রু স্বাধীনতার শত্রুরা, মুক্তিযুদ্ধের শত্রুরা। এখনও ষড়যন্ত্র চলছে, চক্রান্ত চলছে। এখনও এ বাংলার মাটিতে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি আমাদের অর্জন-উন্নয়নের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করছে। কাজেই আজকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের আমাদের সকলকে এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে এবং স্বাধীনতাবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী, স্বাধীনতার মূল্যবোধবিরোধী যে শক্তি এরা আমাদের স্বাধীনতার সপক্ষের সকলের অভিন্ন শত্রু।’

এই ষড়যন্ত্রকারীরা যারা আজকে বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে স্বাধীনতাকে আরেকবার আঘাত করার জন্য, মুক্তিযুদ্ধকে আঘাত করার জন্য বলে মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এদের বিরুদ্ধে আজ লড়াই চালিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি ঐক্যবদ্ধ হবো। এদের প্রতিহত করবো, পরাজিত করবো।’

এর আগে আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবু-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো পর দলটির বিভিন্ন অঙ্গ-সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।