শাহজাহান ওমরকে নৌকার প্রার্থী করা নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

বিএনপির সাবেক নেতা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরকে নৌকার প্রার্থী করার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অনুপ্রবেশ তো জোর করে আসা। কিন্তু তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন। এখানে গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থার লঙ্ঘন হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দল পরিবর্তন করা যায়। তিনি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে এসেছেন। এটা কি অপরাধ?

শনিবার (২ ডিসেম্বর) ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

জামিনে মুক্তির পর শাহজাহান ওমরের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়া নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে অপরাধের সঙ্গে বিষয়টা তুলনা করতে হবে। প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ হত্যার দায়ে জেলে যেসব হেভিওয়েট নেতারা আছেন তারা দায় এড়াতে পারেন না। তাদের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলা, একজন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসের চোখের সামনে। একটা অপরাধের সঙ্গে আরেকটা অপরাধের পার্থক্য বুঝে নিতে হবে।

তিনি বলেন, এটা তার (শাহজাহান ওমর) ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটাও গণতন্ত্র। আমার এ দল ভালো লাগে না, আরেক দলে যাবো, সেটা তো আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন, তা তার বক্তব্যে বলেছেন।

দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে দিতে হস্তক্ষেপ করা হবে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বতন্ত্র বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টার কোনও অভিযোগ আমি পাইনি। নির্বাচন করুক, দেখা যাক, যাকে জনগণ চায়, সে-ই জিতবে।

নির্বাচনে দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ ছাড় দিচ্ছে এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, অনুপ্রবেশকারী কারা চিহ্নিত করুন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হিড়িক পড়া নিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি হেভিওয়েট কারও সীমানা পেরিয়ে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে যায় সেটা স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়। এটাতে আমরা বাধা দিতে পারি না। গণতন্ত্র হল প্রতিযোগিতা। সুষ্ঠু নির্বাচন, সুস্থ প্রতিযোগিতা। এখানে প্রার্থীকে প্রার্থী হিসাবে বিবেচনা করি আমরা।

শরিয়তপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও সংঘাত-বিশৃঙ্খলা হলে পুরো দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটার প্রতি আস্থা থাকবে।

বিএনপির রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ বিভক্ত করতে যায়নি বলে দাবি করে কাদের বলেন, কোনও দলকে ভাগ করা আমাদের নীতি নয়। ভুল নীতির জন্য বিএনপির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি এ কথা যারা বড় গলায় বলেন, উঁচু গলায় বলেন, তারা এ কথা সত্য বলছেন না। আজ ‘তৃণমূল বিএনপি’ এত প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে, এরা সকলেই বিএনপির লোক। বেশিরভাগই বিএনপি থেকে আসা নেতাকর্মী।

বিএনপি বলছে ব্ল্যাকমেলই করে তাদের নেতাদের নির্বাচনে আনা হচ্ছে এমন তিনি কাদের বলেন, ব্ল্যাকমেইল করে কাকে নেওয়া হচ্ছে? বিএনপির নেতৃত্ব কি এতই দেউলিয়া যে ব্ল্যাকমেলই করলে চলে আসবে। রাজনৈতিক পরীক্ষায় এতই ব্যর্থ যে, কারও ব্ল্যাকমেইলিংয়ে প্রলুব্ধ হয়ে অন্য দলে যাবে।

শরিকদের ব্যাপারে সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ১৬ (ডিসেম্বর) তারিখের মধ্যে হয়ে যাবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ-দফতর সায়েম খান প্রমুখ।