শনিবার প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি যান আওয়ামী লীগের নতুন কার্যালয় ঘুরে দেখার জন্য। কার্যালয় ঘুরে দেখে তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সংলাপে বসতে ইতোমধ্যে বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে যে দাবি উঠেছে, সে বিষয়টিও উঠে আসে আলোচনায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমি আলোচনা করতে যাব না। খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসব না। যিনি মানুষ হত্যা করেছেন, যিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে ও আমার দলের নেতাদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছেন, তার সঙ্গে আলোচনায় বসব না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই সময়ে এই বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা কোথায় ছিলেন, যারা আজ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাকে বসার দাবি তুলছেন?’ তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে তারা তো কোনও কথা বলেননি। এছাড়া বিএনপিকে বাঁচানোর দায়িত্ব তো আমার নয়। তারা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, নির্বাচনে আস্থা রাখে, তাহলে তারা নির্বাচন করবে। আমি তাদের সঙ্গে সংলাপ করে নির্বাচনে আনতে পারব না।’
বৈঠকে দলের নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের পরে আমার দায়িত্ব শেষ। আমি তো অনেক দূর নিয়ে গিয়েছি। আমি আর পারব না। আমার বয়স হয়েছে। আমি তো ডিজিটাল লিডারশিপ তৈরি করলাম। আমি এনালগ চালাইলাম। তোমরা ডিজিটাল চালিয়ে নাও।’
এ সময় উপস্থিত সব কেন্দ্রীয় নেতা ‘না’, ‘না’ বলে প্রতিবাদ জানান। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন বলেন, ‘আপনি হলেন এ দলের ইঞ্জিন। ইঞ্জিন ছাড়া বগি যতই লাগান, বগি চলবে না।’ অন্য সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম বলেন, ‘এ দলের জন্য আপনি অপরিহার্য।’
বৈঠকে রবিবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সুইজারল্যন্ড যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে এই ফোরামে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হতো না। এবারই প্রথম আমন্ত্রিত বাংলাদেশ। এটা সরকারের সফলতার প্রমাণ করে।’
বৈঠকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হোসেন মনসুর আরপিওতে নতুন শর্ত সংযোজনের প্রস্তাব করে বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করবে না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস রাখবে না, তারা কোনও রাজনৈতিক দল করতে পারবে না, নিবন্ধন পাবে না।’ এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, এটা ভালো প্রস্তাব। এটা গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী কোনও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি।
শেখ হাসিনা প্রায় ঘণ্টাখানেক ধানমন্ডির কার্যালয়ে অবস্থান করেন। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এই সময় সেখানে সবার সঙ্গে একত্রিত হয়ে বিকালের নাস্তা সন্দেশ, নিমকি, মুড়ি খান। নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মজাও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘এখন থেকেই নির্বাচনের ইশতেহার ঠিক করতে হবে’
/এমএনএইচ/