‘আ. লীগ না চাইলেও বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে’

 

ওবায়দুল কাদের (ছবি: সংগৃহীত)বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে বলে দৃঢ় আশাবাদ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না চাইলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে।’ শুক্রবার বিকালে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সম্পাদকমণ্ডলীর জরুরি সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এক কথা বলেন।

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘বিএনপির ‘রূপকল্প’ বা ‘ভিশন ২০৩০’ মানেই বিভিন্ন জেলায় জেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীষণ মারামারি। সদস্য সংগহের নামে তারা জেলায় জেলায় যেভাবে বিশৃঙ্খলা করছেন, তাতে দলটির নেতাকর্মীদের গায়ে কাপড় থাকে না, এগুলো দেখে হাসি পায়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেগুলো দেখার পর বিএনপি নকল করে করতে গিয়েই বিপাকে পড়ে ।’’

আওয়ামী লীগকে বিএনপি  অনুকরণ করে এমন মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজকের ভিশন শুধু নয়, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম, 'এক মুজিবের লোকান্তরে, লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে।’ এরপর জিয়াউর রহমান হত্যার পর বিএনপিকে দেখেছি ‘এক জিয়া…’ স্লোগান দিতে।’’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নতুন নতুন ধারা তৈরি হবে। গণতন্ত্রের দিক বিবেচনায় এটা চলুক সেটা আমরাও চাই। শেষ না দেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি, আ স ম আব্দুর রব ভাই আমার নেতা ছিলেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তার বাসায় উল্টাপাল্টা কিছু ঘটে থাকলেও অবশ্যই খবর পেতাম। তেমন কিছু ঘটেনি। তারপরও আমি খবর নেব।’  

গণমাধ্যমের প্রতি বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক একটি দল। আমাদের ঘরোয়া গণতন্ত্র, তর্ক-বিতর্ক নিয়ে, সঠিক তথ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করুন। তথ্য যাচাই না করে রঙ চড়ানোর কোনও দরকার আছে? অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের সমালোচনা আমরা করব। কেউ কেউ এমন বিষয় নিয়ে আসেন, যেগুলো তথ্য নয়। আংশিক সত্যও আসে না।’

দলের মুখপাত্রের সঙ্গে কথা বলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি কোনও নিউজ করার পক্ষে নই, গঠনমূলক সমালোচনা করলে আমরা দল হিসেবে শুদ্ধ হতে পারি। গণমাধ্যমকে আমরা শত্রু মনে করি না।’

সারাদেশে ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় খুব ভালোভাবে সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হয়নি বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতলে খবর আসে না। এটা যদি বিএনপি করতো, তবে বড় করেই খবর প্রকাশ হতো।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সারাদেশে ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ২ স্থগিত হয়েছে বন্যাজনিত কারণে। বাকি ২৯টিতে আ. লীগ ২২, স্বতন্ত্র ৪, বিএনপি ৩। তৃণমূলে আমরা শক্তিশালী, আমরা মুখে বলি না, কাজেও দেখিয়েছি। তৃণমূলে যারা শক্তিশালী, তারাই আগামী নির্বাচন জিতবে।’

আগস্ট মাসের কর্মসূচি পালনের নামে ভুয়া সংগঠন বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি যেন করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সুজিত রায় নন্দী, আব্দুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেইন প্রমুখ।

পিএইচসি/এমএনএইচ/