দলটির নেতারা বলছেন, ৭ মার্চের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রকারীরা ঐতিহাসিক দিনটির ‘স্পিরিট’ নষ্ট করতে নারীদের বেছে নিয়েছে। তবে যাই হোক, তদন্তসাপেক্ষে এসব ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় আওয়ামী লীগ। তারা বলছেন, এই সমাবেশের ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট করতে অনুপ্রবেশকারীদের চক্রান্তেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। ফলে এই দলের নেতাকর্মীরা নারী লাঞ্ছনার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। তবে যারাই এর সঙ্গে জড়িত থাকুক, খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টরা কাজ করবেন। ক্ষমতাসীন দলের দৃষ্টিতে এটা নিন্দনীয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, নারীদের লাঞ্ছনার শিকার হওয়ার ঘটনাগুলো সমাবেশের ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট করতে কোনও মহলের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। ফলে এই দলের নেতাকর্মীরা এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে না। তবে এ নিন্দনীয় ঘটনার সঙ্গে যে দলের নেতাকর্মীরাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে আশা করছি।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনিও বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের অসম্মানিত করার মানসিকতা এ দলের কারও থাকতে পারে বলে বিশ্বাস করি না। দীপু মনি বলেন, ‘সমাবেশের পরিবেশ নষ্ট করতে এ ধরনের ঘটনা অনুপ্রবেশকারীরাও ঘটাতে পারে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জনসভার দিন কোথাও কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে এর সঙ্গে জনসভার সংশ্লিষ্টতা আছে বলে মনে করি না। জনসভার মূল স্পিরিট নষ্ট করতে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারে। তবে যে বা যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন, এ ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স অবস্থান রয়েছে।’ এ ঘটনা নিয়ে কেউ রাজনীতি করার চেষ্টা করবে না বলে আশাবাদ জানান তিনি।
৭ মার্চের জনসভাকে কেন্দ্র করে নারীদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও। কয়েকটি ঘটনার ফুটেজ হাতে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারীদের শ্লীলতাহানির ভিডিও ফুটেজ হাতে এসেছে। ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধী যে দলেরই হোক, ছাড় দেওয়া হবে না।’
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এদিন বাংলামোটর, শাহবাগসহ ছয়টি এলাকায় নারীরা জনসভায় অংশ নিতে আসা ব্যক্তিদের মাধ্যমে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ এসেছে। অভিযোগকারী নারীরা বলছেন, বিভিন্ন কাজে বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা। অশ্রাব্য গালি থেকে শুরু করে গায়ে বোতলের পানি ছিটিয়ে দেওয়া, বোতল ছুড়ে মারা এবং ঘিরে ধরে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। অনেক নারীই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন-
সোহরাওয়ার্দীর জনসভার আশেপাশে নারী হয়রানির অভিযোগ ফেসবুকে ভাইরাল
৭ মার্চের সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারীদের শ্লীলতাহানির ভিডিও ফুটেজ হাতে এসেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী