জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণের কথা বলে বিএনপি ভাঁওতাবাজি করেছে: সেতুমন্ত্রী

ওবায়দুল কাদের (ফাইল ছবি)জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী জাতিসংঘ সদর দফতরে গেছেন বিএনপি প্রতারণা করেছে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি জনগণের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি ও প্রতারণামূলক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।’ সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব বিএনপির মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে দলটি প্রচার করেছে। কোনও আমন্ত্রণ তো নেই। যখন ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিউইয়র্কে গেলেন, তখন জাতিসংঘের মহাসচিব ঘানায় একটি প্রোগ্রামে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। যিনি দাওয়াত দিলেন, তিনি ঘানা চলে গেলেন? জাতিসংঘের সদর দফতর নিয়ে এ ধরনের ভাঁওতাবাজি ও প্রতারণা যারা জাতির সঙ্গে করে, তাদের নিয়ে কী বলবো?’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশের জনগণের সঙ্গে কেন  ভাঁওতাবাজি ও প্রতারণামূলক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে, তার  জবাব তাদের দিতে হবে।’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই মিথ্যাচার হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। মিথ্যাচার  ও প্রতারণায় তারা বিশ্বরেকর্ড ছাড়িয়েছে। এখন জাতিসংঘের মহাসচিবের নামেও তারা প্রতারণা করে, মিথ্যাচার করে। এদের হাতে গণতন্ত্র  নিরাপদ?’

যারা জাতিসংঘ নিয়ে প্রতারণা করে তাদের হাতে দেশে নিরাপদ হতে পারে না বলে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেটা শুনেছি, জাতিসংঘের সদর দফতর গেট গিয়ে বারবার অনুরোধ করেছে তারা। তখন একজন অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি বিরক্ত হয়ে কিছুটা সময় দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘আলোচনার পর জাতিসংঘ থেকে যে মন্তব্যটা এসেছে, তা হলো বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, এটা তারা চায়। এই কথা তো তারা বলেই আসছে, এই কথার জন্য তো ফখরুলের নিউইয়র্কে যাওয়ার কথা ছিল না। জাতিসংঘের সদর দফতরে যাওয়ার কথা ছিল না। এর জন্য লবিয়িস্ট নিয়োগ করে স্টেট ডিপার্টমেন্টেও যোগাযোগ করেছেন তারা। কোথাও কেউ তাদের কোনও আমন্ত্রণ করেনি।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে নামার জন্য বিএনপির হুমকিকে কীভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২০১৩,১৪,১৫ সালের মতো পেট্রলবোমার আন্দোলন কি বিএনপি শুরু করবে? সেই আন্দোলন যদি তারা করতে যায়, সে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে যায়, তাহলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যা যা করণীয়, তার জবাব দেওয়া হবে।’

যুক্তফ্রন্ট গঠনকে আওয়ামী লীগ কীভাবে দেখছে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কামাল সাহেব বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে তারা নেই। কাদের সিদ্দিকীও বলেছেন একই কথা। এখন নির্বাচনি মেরুকরণে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়ায়, এটা এই মুহূর্তে বলা খুব মুশকিল।তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন জোট গঠনের যে প্রক্রিয়া, এটাকে আমরা স্বাগত জানাই। এর বিরুদ্ধে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির যে ঐক্য, এটা সাম্প্রদায়িক ঐক্য।জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। যারা নিজেদের ঘরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ নয়, তারা দেশের মধ্যে কীভাবে ঐক্য গড়বেন, এটা নিয়ে একটা প্রশ্ন রয়ে যায়। তারা নিজেরাই নিজেদের ঘরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ নয়, তারা নিজেরা একে অন্যকে সরকারের দালাল বলে, নিজেদের অফিসে তাদের নিজেদের মধ্যে অনেক সময়ই ঝগড়া বিবাদে লেগে থাকে।’ আওয়ামী লীগকে ছাড়া জাতীয় ঐক্য সম্ভব নয় বলেও ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেন।