প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর মাসজুড়ে আওয়ামী লীগের চারটি সহযোগী এবং একটি ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলনও।
৬ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলনের মাধ্যমে শুরু হয় এই সম্মেলন। ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন শ্রমিক লীগের সম্মেলন। ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ২৩ নভেম্বর যুবলীগ এবং ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় মৎসজীবী লীগের সম্মেলন। সর্বশেষ ৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দুই অংশের সম্মেলন।
এসব সংগঠনকে এক সপ্তাহ থেকে এক মাস সময় দেওয়া হয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনোটিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি। অথচ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। ২১ ডিসেম্বর সম্মেলন অধিবেশন থেকে ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির ৪২ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২৮ ডিসেম্বর বাকি প্রায় সবগুলো নামই ঘোষণা করা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষক লীগ এবং শ্রমিক লীগ পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা মূল সংগঠন আওয়ামী লীগের কাছে জমা দিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিও প্রায় চূড়ান্ত।
যুবলীগের নেতারা বলছেন, তারা নেতাকর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেছেন কিন্তু এখনও তালিকা করা হয়নি। এছাড়াও সহসম্পাদক পদ বিলুপ্ত করে সংগঠনের গঠনতন্ত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনার জন্যও দেরি হচ্ছে।
মৎসজীবী লীগের সম্মেলনের দিনই ১৩ জনের নাম ঘোষণা হয়েছে। সিটি নির্বাচনের পরে বাকিদের তালিকা করা হবে বলে জানান সংগঠনটির সভাপতি আজগর নস্কর।
এদিকে সিটি নির্বাচনে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ পুরোপুরি ব্যস্ত থাকায় তারা কমিটি করার কাজ শুরু করেনি।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তাদের নেতাকর্মীরা সিটি নির্বাচনে ব্যস্ত। বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতারা নিজেরাই প্রার্থী হয়েছেন।
উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর জন্য দলের সমন্বয় কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নিজেও এই কমিটির সদস্য। তাই সিটি নির্বাচন শেষে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কাজ শুরু করবেন।
দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরেরও একই বক্তব্য। তিনি জানান, তিনি দক্ষিণের মেয়র প্রার্থীর জন্য দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে কাজ করছেন। সভাপতিও এই কমিটির সক্রিয় সদস্য। এখন তারা দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে কাজ করছেন। নির্বাচনের পরে পূর্ণাঙ্গ কমিটির কাজ শুরু করবেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তারা কমিটির খসড়া চূড়ান্ত করেছেন। কিন্তু সিটি নির্বাচনে ব্যস্ত কারণে সেটা চূড়ান্ত করার সময় পাওয়া যাচ্ছে না। একদিন সংশ্লিষ্টরা বসলেই চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।’
তিনি জানান, নির্বাচন চলাকালীন বসতে না পারলেও নির্বাচনের পরপরই তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি চূড়ান্ত করবেন।
তবে এক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে যুবলীগ। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তারা নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা করতে সময় পাচ্ছেন না। নির্বাচনের পরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেবেন বলেও উল্লেখ করেন নিখিল। এদিকে গঠনতন্ত্রে কিছুটা সংশোধন আনার জন্য দেরি হচ্ছে বলেও যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে।