সিটি নির্বাচনে দলের বিরোধিতাকারীদের ব্যাপারে খোঁজ নিতে শেখ হাসিনার নির্দেশ

শেখ হাসিনা

সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরোধিতাকারীদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নির্বাচনে বেশকিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এমন নির্দেশ দেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেলকে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী দলের সভাপতির কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেন। তারা দলের স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বিভিন্ন শাখার বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে অসহযোগিতা ও বিরোধিতার অভিযোগ জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে উপস্থিত দলের এ তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাকে বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলেন শেখ হাসিনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দলের সভাপতি কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন। এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’ এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

প্রসঙ্গত, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু দলের সমর্থন না পেয়েও বিভিন্ন ওয়ার্ডে এ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। একক প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে বিদ্রোহীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে।

তারা অনেক প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে পারলেও শেষ পর্যন্ত দুই সিটির ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭৭টি ওয়ার্ডে ১১৫ জন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়ে যান। প্রথম দিকে দলের সাধারণ সম্পাদকসহ দুই নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা না হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা ও নানা শাস্তির হুমকিও দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরও বিদ্রোহীরা নির্বাচন করেন। অভিযোগ ওঠে, দলের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের গুটিকয়েক নেতা, একটি সহযোগী সংগঠনের এক শীর্ষ নেতা এবং দু’জন সংসদ সদস্য দল সমর্থিত প্রার্থীদের অসহযোগিতা করেন। ক্ষেত্রবিশেষে বিরোধিতাও করেন। এ অবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দুই সিটিতে ২৫ জনেরও বেশি বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হন।

দল সমর্থিত যেসব কাউন্সিলর প্রার্থী দলীয় নেতাদের অসহযোগিতা ও বিরোধিতার কারণে হেরেছেন, তাদের কয়েকজন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেছেন। দু’একটি ওয়ার্ডের পরাজিত প্রার্থীরা ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ করে তাদের হারানো হয়েছে বলেও দাবি করেন। আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, এ বিষয়টির ব্যাপারেও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে খোঁজখবর নেওয়া হবে।