আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোতে নারীর সংখ্যা কম কেন?

সম্প্রতি ঘোষিত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নারীদের সংখ্যা বেশ কম। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া আরপিও অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার শর্ত মানা হয়নি এসব কমিটিতে। একটিতে একজন নারী শীর্ষ পদ পেলেও অন্যরা পেয়েছেন অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদ। তবে প্রতিটি কমিটিতেই নারী বিষয়ক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন নারীরা।

যুবলীগের ২০১ সদস্যবিশিষ্ট বিশাল কমিটিতে মাত্র চারজন নারী। তারা হলেন-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুক্তা আক্তার, উপ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা সানজীদা শারমিন, নির্বাহী সদস্য চৌধুরী মৌসুমি ফাতিমা ও শাম্মী পাল। শতকরার হিসাবে যা মাত্র দুই শতাংশ। এরা কেউই নীতি নির্ধারণী পদে নেই। মহিলা সম্পাদক অনেকটাই কোটার পদ। আর নির্বাহী সদস্য নামমাত্র একটি পদ।

বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখীল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যুবলীগ মূলত যুবকদের সংগঠন। নারীদের যুব মহিলা লীগ নামে আরেকটি সংগঠন রয়েছে। সে কারণেই যুবলীগে নারীর সংখ্যা কম।’

নারীদের সংখ্যা ও গুরুত্বের বিচারে কিছুটা ভালো অবস্থানে আছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট সংগঠনটিতে নারী আট জন। এদের মধ্যে দু’জন সহ-সভাপতি, মহিলা ও উপ-মহিলা সম্পাদক এবং উপ-প্রতিবন্ধী সম্পাদকসহ তিনজন সদস্য রয়েছেন। শতকরা হারে সাড়ে পাঁচ শতাংশের মতো। এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু জানান, তারা আরও কিছু নারীকে তাদের সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করবেন। তবে আওয়ামী লীগে নারীদের আলাদা দুটি সংগঠন থাকায় অন্য সংগঠনে নারীরা কম আসেন।

কৃষক লীগের কমিটি ১১১ সদস্যবিশিষ্ট। এতে নারী রয়েছেন ১১ জন। সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে নারীর সংখ্যা ও পদের গুরুত্বে সবচেয়ে এগিয়ে সংগঠনটি। এর সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি একজন নারী। এ ছাড়া দু’জন সহ-সভাপতি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, মহিলা ও উপ-মহিলা, স্থানীয় সরকার, সংস্কৃতি, সহ-আইন সম্পাদকসহ দু’জন নারী সদস্য রয়েছেন এ সংগঠনে। শতকরা হার নয় দশমিক এক শতাংশ।

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসার মতো যোগ্যতা যাদের রয়েছে তারা পদ পেয়েছেন। যোগ্যতাসম্পন্ন আরও পেলে তাদেরকেও পদ দেওয়া হতো।’

মৎস্যজীবী লীগের ১১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে নারী ছয় জন। দু’জন সহ-সভাপতি, দু’জন সম্পাদক ও দু’জন নারী সদস্য আছেন এতে। শতকরা হার তিন দশমিক ছয় শতাংশ। এত অল্প সংখ্যক নারী সদস্য থাকার কারণ জানতে চাইলে মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর নস্কর বলেন, তার সংগঠন পেশাজীবী সংগঠন। আর নারীরা সাধারণত এ পেশায় আসে না। সংগঠন হিসেবেও মৎস্যজীবী লীগ নতুন। কমিটিতে আরও কিছু নারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত যেসব বায়োডাটা পাওয়া গেছে, তাতে যোগ্য কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান আজগর নস্কর।