আ. লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা

মেয়র জাহাঙ্গীরের ভাগ্য নির্ধারণ আজ

বিএনপিবিহীন চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতা ও খুনোখুনির ঘটনায় বিব্রত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটানোর কর্মকৌশল শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আলোচনা করে  নির্ধারণ করবে দলটি। ওই সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ওই নোটিশের জবাব দিয়েছেন তিনি। তার জবাব নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান।

সর্বশেষ গত ৯ সেপ্টেম্বর গুরুত্বপূর্ণ ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, কার্যনির্বাহী বৈঠকে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সহিংসতা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কটূক্তি করেছে সেটা নিয়েও আলোচনা হবে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছ গাজীপুরের রাজনীতিতে জাহাঙ্গীর থাকবেন কিনা সেটা নির্ধারণ করা হবে কার্যনির্বাহী সংসদের সভায়।

শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির ৪৯ সদস্যকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। সভাপতিমণ্ডলীর ১০ সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সবাই। বাকি সদস্যরা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও কার্যনির্বাহী সদস্য।

বৈঠকের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশন মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। একই সভায় চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়েও আলোচনা হবে।

গত সেপ্টেম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ক্লিপে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেন। ওই ভিডিও প্রকাশের পর জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার ও পদ থেকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করেন গাজীপুর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

এ ঘটনার পর ৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীর আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। সে নোটিশের জবাবও দেন তিনি। নোটিশের জবাব নিয়ে গত ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে তার জবাব নিয়ে দলটির হাইকমাণ্ড অসন্তোষ প্রকাশ করে।  

গাজীপুরের মেয়রের বিষয়টি ছাড়াও বৈঠকে ইউপি নির্বাচন, দলীয় কোন্দল, বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। এক নেতা বলেন, ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকানো যাচ্ছে না। গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের কিছু ইউপি উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ইউপিতে প্রতীক না রাখার অনুরোধ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় থাকবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়টিও।

বৈঠকের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কার্যনির্বাহী বৈঠকে আমাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হবে। আর আলোচনা হবে গাজীপুরের মেয়রর বিষয়টা নিয়ে।