ভোটাধিকার নিশ্চিতে ইসি আইন এক মাইলফলক: ওবায়দুল কাদের

দেশের ইতিহাসে গণমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন আইন এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এই আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে ওবায়দুল কাদের তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া সংবিধানের অভিপ্রায় অনুযায়ী স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে জাতীয় সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’ পাস হওয়ায় সংসদ নেতাসহ জাতীয় সংসদের সদস্যদের প্রতি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে ‘গণতন্ত্র ও জনমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ’ উল্লেখ করে কাদের বলেন, বাংলাদেশে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণে যা কিছু হয়েছে তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মতো নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে সব রকমের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সংবিধানের আলোকে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে এই আইন অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। 

তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা প্রণীত এই আইনকে দেশের একটি চিহ্নিত মহল অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশে গ্রহণযোগ্য নয় বলে যে মন্তব্য করেছেন, বিএনপি মহাসচিব এটা নিয়ে দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন। তবে যে দল বা ব্যক্তি দেশের জনগণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোটি কোটি ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করে, তাদের কাছ থেকে এই ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যই প্রত্যাশিত ছিল।’ 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থী গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য রেখেছেন তা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, জাতীয় সংসদের সব সদস্য ও দেশের সংবিধান এবং আইনের শাসনের প্রতি নির্মম উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়। দেশের আইন ও সংবিধানের প্রতি বিএনপির কোনও বিশ্বাস নেই। তাই বিএনপি জনগণের ভোট নয়, বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করেই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে চায়। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বিএনপির লবিস্ট নিয়োগের বিষয়টি স্বয়ং মির্জা ফখরুল নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন। শুধু তা-ই নয়, বিএনপি মহাসচিব নিজে স্বাক্ষর করে দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মার্কিন প্রশাসনের রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত লজ্জার বিষয়।’ বিএনপি এখন নির্বাচন ছাড়া ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। 

বিএনপি কাদের দেওয়া টাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করেছে তাও জানতে চান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে এই অর্থ কোন চ্যানেলে বিদেশে পাচার করা হয়েছে? তার হিসাব কি বিএনপি নির্বাচন কমিশনের কাছে দিয়েছেন? 

বিএনপি মহাসচিবের কাছে এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তা না পারলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনও নৈতিক ও আইনগত অধিকার থাকবে না।’