দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন চলছে রাজধানীতে। সম্মেলন শেষে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটিতে কারা আসছেন, তা জানতে আগ্রহী তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তবে দলের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ওপর তাদের সবার আস্থা। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাতেই তারা খুশি থাকবেন বলে জানান সম্মেলনে যোগ দিতে আসা কর্মীরা।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থলে আসতে থাকেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবরের মতো এবারও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও যোগ্যতাসম্পন্ন নেতাদেরই কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই দেবেন বলে তারা আশাবাদী। সেই নেতাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাবে বলে তাদের বিশ্বাস।
সূর্যদয়ের পর থেকেই নেতাকর্মীদের মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলের দিতে আসতে দেখা যায়। এসময় তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে স্লোগান। এছাড়াও বিএনপি-জামায়াত জোটকে প্রতিহত করতে ও দেশবিরোধী যেকোনও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারা রাজপথে সক্রিয় থাকার স্লোগানও দেন মিছিলে।
কমিটি নিয়ে নেত্রীর যে কোনও সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের নির্বাচনি এলাকা মাদারীপুর থেকে আসা ছাত্রলীগ নেতা নোবেল ব্যাপারী বলেন, আমাদের দেশনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন, কী করলে দলের জন্য ভালো হবে। তিনি যেই কমিটিই গঠন করে দিন না কেন আমরা তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবো। তাদের নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ সরকারকে সামনের দিক এগিয়ে নিয়ে যাবো।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে কী ধরনের পরিবর্তন হতে পারে বলে আশা করছেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্মেলন শেষে তো দেখতেই পাবো। অপেক্ষায় আছি। তবে যাকেই কমিটিতে আনুক না কেন, আমরা সব কিছুতেই খুশি।
চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের সমর্থক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আমাদের বিশ্বাস আমাদের নেত্রী দেশের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী দেশ ও দলের কল্যাণে অবশ্যই যোগ্য লোককে বেছে নেবেন। সেই যোগ্য নেতৃত্বকে দেখতেই সম্মেলনে আসা।
আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একই পদে থাকছেন– এমন খবরে খুশি নোয়াখালীর কবিরহাট ও কোম্পানিগঞ্জে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। কবিরহাট উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ কে সিরাজুল্লাহ বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ এসময় দলের সভাপতি যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই আবারও দ্বায়িত্ব দেবেন। তবে নতুন কমিটিতে যেই আসুক, আমাদের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব অনেক। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নতুন কমিটির নেতৃত্বে তৃণমূলকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার নেবো আজকের এ সম্মেলনে।
আজকের এ সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে গোটা বাংলাদেশ–এই মন্তব্য করে বাংলাদেশ তাঁতী লীগের সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের বিগত কমিটি ছিল খুব সক্রিয় ও সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য৷ আমাদের বিশ্বাস জননেত্রী শেখ হাসিনা এবারও যে কমিটি দেবেন, সেই কমিটি তৃনমূল নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে৷ সেই সঙ্গে আজকের সম্মেলন থেকে আগামী নির্বাচনে দলকে আবারও জিতিয়ে আনতে আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা দলের তৃণমূলকে নতুন যে নির্দেশনা দেবেন তা আমরা সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করবো।
২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনে আগামী বছর আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে জানান রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ কারণে নতুন কমিটিতে বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন না আনার ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
ছবি: নাসিরুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, মাহফুজ সাদি।