বিএনপি সমাবেশের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করে: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, সতর্ক থাকবেন। আগুন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত আবারও সন্ত্রাস চালাতে পারে। তিনি বলেন, ‘সমাবেশের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। এই টাকার উৎস কোথায়?’

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশে’ এসব কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল বিএনপি, এমন অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হাজারো নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে। কী অত্যাচার তাদের ওপর করা হয়েছে! বিএনপি এখনও প্রকাশ্যে রাজনীতি করছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘সমাবেশের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করে। টাকা-পয়সা দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক এনে ‘পিকনিক পার্টি’র ব্যবস্থা করে মির্জা ফখরুল। এই টাকার উৎস কোথায়?’’

বিএনপিকে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্টের সিরিজ বোম হামলা করা জেএমবির প্রধান পৃষ্ঠপোষক দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগুন নিয়ে তারা আবারও হামলা চালাতে গোপন বৈঠক করছে। বাংলাদেশের সব অপশক্তি বিএনপির নেতৃত্বে অপকর্ম করছে। এ অপশক্তিকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার শপথ আমাদের নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জেএমবিকে দিয়ে সিরিজ বোমা হামলা পরিচালনা করেছিল তারেক রহমান। এই সত্য আর কত দিন গোপন রাখবেন।’

আওয়ামী লীগ জিয়া পরিবারকে নিশ্চিহ্নের ষড়যন্ত্র করছে বলে বিএনপি নেতাদের তোলা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘তোমরাই বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছো। খালেদা জিয়া এখন জেলের বাইরে আছেন কার দয়ায়? শেখ হাসিনার। বিচার আমরা করিনি, মামলাও আমরা দিইনি। আদালতের রায়ে খালেদা জিয়া শাস্তি ভোগ করছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্টসহ বিভিন্ন সময় বিএনপি চেষ্টা করেছিল। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে।’

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি নেতাদের বলি, পৃথিবীতে এখনও একটা দেশ আছে, সেই দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আছে। আমি ফখরুল সাহেবকে বলি— দলবল নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক পাবেন। দুনিয়ার আর কোনও গণতান্ত্রিক দেশে তত্ত্বাবধায়কের হদিস নেই, খবর নেই। পেয়ারের পাকিস্তানে চলে যান (ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা), এই দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আদালত কবর দিয়ে দিয়েছে। এ ভূত মাথা থেকে নামান।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, ‘সোজা পথে আসুন, নির্বাচনের পথে আসুন। না হলে আমও যাবে, ছালাও যাবে। দুইটাই কিন্তু যাবে। শেখ হাসিনার শেকড় বাংলার মাটির অনেক গভীরে। মুখে স্লোগান দিয়ে, গালি দিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব নয়। আল্লাহ যাকে রাখবে, বান্দা তাকে মারতে পারে না। শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর রহমত আছে। এই দেশের মানুষের ভালোবাসা আছে।’

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আপনারা (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা) অতীতে জীবনবাজি রেখে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করেছেন। আসুন, আজ আবার শপথ নিই, এই সন্ত্রাসীদের, জঙ্গিদের, স্বাধীনতার শত্রুদের বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎপাটন করবো।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ।