ভিন্নমতের নামে দেশের বিরোধিতা সহ্য করা হবে না: শেখ পরশ

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, এই দেশে আওয়ামী লীগ বিরোধী মতবাদ থাকতে পারে এবং ভিন্নমত গণতন্ত্রের অলংকার। আমরা বিশ্বাস করি, একটি প্রগতিশীল, উদারমনা রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হবে। যারা আওয়ামী বিরোধী হতে পারে, ভিন্নমতের হতে পারে, কিন্তু দেশবিরোধী কোনও শক্তি আমরা চাই না। তিনি বলেন, ‘ভিন্নমতের নামে দেশের বিরোধিতা সহ্য করা হবে না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সংসদীয় আসনভিত্তিক অবস্থান কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা-৬ আসনের নারিন্দা খোকা মাঠে এসব বলেন তিনি।

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘গত এক মাস ধরে একটা অবৈধ দলের অবৈধ কর্মসূচি চলছে। কিন্তু আপনারা কি দেখছেন? তারা এক দিকে অবৈধ অবরোধ দিচ্ছে, অপরদিকে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বোঝা যায়, তাদের অবৈধ অবরোধ কর্মসূচি এদেশের জনগণ সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করেছে। আমার একটি প্রশ্ন, এই হরতাল বা অবরোধের মানেটা কী? এই কর্মসূচির মাধ্যমে আসলেই কি সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব? এটা কি কোনও প্রতিবাদের প্রতীকী ভাষা? তাহলে জনগণের সম্পৃক্ততা কোথায়? জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া এই কর্মসূচি অর্থহীন। আর  যদি তারা সরকারের পতনই না ঘটাতে পারে, তাহলে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে লাভ কী? এ ধরনের প্রশ্ন সাধারণ মানুষের সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে বানচাল করা। যেকোনোভাবে সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি অনির্বাচিত সরকারকে গদিতে বসানো। এই দুই উদ্দেশ্য তাদের সফল হতে পারেনি,  আমাদের যুবলীগের নেতাকর্মীদের জন্য। এই সব অপশক্তি যারা দেশবিরোধী, যারা এই দেশের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে না, যারা এখনও পাকিস্তানি ভাবধারার বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চায়, যারা মৌলবাদের পৃষ্ঠপোষক, যারা আমাদের সনাতন ভাই-বোনদের ওপর অত্যাচার করেছে এবং করার সুযোগ খোঁজে— তাদেরকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিহত করেছেন। আপনাদের কারণেই এই দেশবিরোধী অপশিক্ত ইঁদুরের গর্তে ঢুকে গিয়েছে। এই ইঁদুরের গর্ত থেকে বের হয়ে তারা দুই- একটি বাসে আগুন দিচ্ছে, ককটেল মারছে।’

অবস্থান কর্মসূচিতে যুবলীগের নেতাকর্মীরা

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘জনগণের সম্পদ নষ্ট করে জনগণের সমর্থন অর্জন করা যায় না। এই কৌশল কোনোদিন কাজে দেবে না। আপনারা জানেন, আমরা দাবি তুলেছি— এই সন্ত্রাসী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। কারণ আমাদের যুক্তি একটাই, এই দেশে কোনও দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী— যারা এই দেশের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে না, তাদের তো রাজনীতি করার অধিকার নেই।’

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ সাইদ খোকন বলেন, ‘সারা দেশে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে যুবলীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ, যুবলীগই পারবে সব অপশিক্তকে প্রতিহত করে নৌকাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে।’

ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন— যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ প্রমুখ।

এছাড়া ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের অন্তর্গত ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে সুবাস্তু টাওয়ার, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২ সংসদীয় আসনে যুবলীগ চত্বর, ফার্মগেট, ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসনে শ্যামলী, ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনে মিরপুর-১০ গোল চত্বর, ঢাকা-১৬ সংসদীয় আসনে মিরপুর-১১ বাস স্ট্যান্ড ও ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসনে আজমপুর, উত্তরায় এবং ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের অন্তর্গত ঢাকা-২ সংসদীয় আসনে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড, কামরাঙ্গীরচর লোহার ব্রিজ, ঢাকা-৪ সংসদীয় আসনে শ্যামপুর ইকো পার্কের সামনে, ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনে শনির আখড়ার দনিয়া কলেজের সামনে, ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনে চকবাজার মোড়, ঢাকা-৮ সংসদীয় আসনে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও ঢাকা-৯ সংসদীয় আসনে কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ বৌদ্ধ মন্দির সংলগ্নে ও ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সংসদীয় আসনভিত্তিক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।