শেখ মনি ছিলেন রাজনীতির গতিধারা বদলের পুরোধা নেতৃত্ব: আমু

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, শেখ ফজলুল হক মনি শুধু যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা নন, তিনি এদেশের রাজনীতির গতিধারা পরিবর্তনের অন্যতম পুরোধা নেতৃত্ব ছিলেন।

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে সংগঠনটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘সর্বপ্রথম আইয়ুববিরোধী দুইটি আন্দোলনের মূল নেতা ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু ৬ দফা দাবি দিলে সেই দাবি আদায়ের জন্য ছাত্র-শ্রমিক নেতাদের মাধ্যমে সফল হরতাল পালন করেন তিনি। শিক্ষা জীবন শেষ করার পরেও তিনি থেমে থাকেননি। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন হলে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্ঘবদ্ধ করতেন, আন্দোলনের নির্দেশনা দিতেন। শেখ মনি একদিকে যেমন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন, অপরদিকে তেমনই সাহসী লেখকও ছিলেন।’

আমু বলেন, ‘তিনি অনেক পড়াশুনা করতেন বিধায়, একজন লেখক ও চিন্তাবিদ হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করতে পেরেছিলেন। ১৯৬১ সালে সোহরাওয়ার্দীর মুক্তিসহ গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্রের দাবিতে সারা দেশ থেকে ছাত্রদের ডেকে এনে শেখ মনি সংগ্রাম করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শেখ মনি বিএলএফ (বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স) এর লিফলেট বিতরণ করেছিলেন। এই স্বাধীনতার আন্দোলন ১৯৬১ সাল থেকে শেখ মনির মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ শুরু করেছিল।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘খুনিচক্র, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, ওই অপশক্তি যারা বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি, যারা পাকিস্তানের দালাল, যারা পাকিস্তানের আদর্শে, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির আদর্শে যারা বিশ্বাস করতো, তারা ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবার ও শহীদ শেখ ফজলুল হক মনিকে তার স্ত্রীসহ নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘এই দেশের অপরাজনীতির মূলহোতা বিএনপি-জামায়াত। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভক্ষক বিএনপি-জামায়াত। তারা দেশকে ধ্বংস করার জন্য অবৈধভাবে হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে। তাদের হরতার-অবরোধ আর তাদের অপকর্মের কারণে মানুষ এখন হরতালকে ঘৃণা করতে শিখেছে। দু-চারটা পটকা ফুটিয়ে আর যাই হোক, মুজিব আদর্শের সৈনিকদের, শেখ হাসিনার সৈনিকদের ভয় দেখানো যাবে না। বাংলাদেশের যুবসমাজ বিএনপি-জামায়াতের দুর্নীতির রাজনীতি, নাশকতার রাজনীতি কায়েম করতে দেবে না। এটাই হোক শেখ মনির জন্মদিনের যুবলীগের শপথ।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা প্রমুখ।

এর আগে সোমবার সকালে বনানী কবরস্থানে শেখ ফজলে হক মনিসহ ১৫ আগস্টে নিহত সব নিহতের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।