‘আন্দোলন নয়, রাজনৈতিক কর্মসূচি’র পরামর্শ খালেদা জিয়ার

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আদায়ে সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বুধবার রাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে শরিক নেতাদের উদ্দেশে তিনি এ পরামর্শ দেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া জোটের একাধিক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

২০ দলীয় জোটের বৈঠকে খালেদা জিয়াসহ শরিক নেতারাজোটের শীর্ষ নেতারা জানান, খালেদা জিয়ার পরামর্শ এখন থেকে আন্দোলন শব্দটি নয়, রাজনৈতিক কর্মসূচি শব্দটি সামনে আনতে হবে। বৈঠকের সমাপনী বক্তব্যে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এদিন রাত নয়টার বৈঠক শুরু হয়ে রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বৈঠকে শেষ হয়। তবে বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।

সূত্র জানায়, বৈঠকে অংশ নেওয়া শরিক দলের প্রত্যেক নেতা আলোচনা করেন। তবে মুসলিম লীগের নেতা কামরুজ্জামান বৈঠকে কথা বলেননি। বৈঠকে বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার ও আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব এবং জামায়াত ইসলামের আমিরসহ শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার ও রিমান্ড, জোটের শরিক দল কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এমএম আমিনুর রহমান নিখোঁজ থাকায় নিন্দা প্রস্তাব করা হয়।

বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে ‘জোর দেওয়ার’ করার জন্য শরিকদের পরামর্শ দেন। তিনি বিচার বিভাগের বর্তমান সংকট নিয়ে কথা বলেন। আগামীতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হওয়ার ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা অনুসরণ ও সংবিধান সম্মতভাবে বিচারপতি নিয়োগে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে শরিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

এছাড়া জোট নেতারা বৈঠকে গতমাসে খালেদা জিয়ার কক্সবাজার সফর, ১২ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জনসভার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়াকে আরও বেশি গণমুখী কর্মসূচি নেওয়ার পরামর্শ দেন। জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘কর্মসূচি দেওয়ার সাধ্যমতো চেষ্টা করবো। আমার শারীরিক অবস্থা ও পরিস্থিতির ওপরেও বিষয়টা অনেকটা নির্ভর করছে।’

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা ইসহাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জোটনেত্রী লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর আমাদের সঙ্গে এই প্রথম বৈঠক হয়েছে। তিনি আমাদের কুশলাদি জানতে চেয়েছেন এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর আলোচনা করেছেন। বৈঠকে শরিক দলের নেতারাও মতামত ব্যক্ত করেন।’

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব ও জোট সমন্বয়ক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মওলানা আব্দুল হালিম, জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানিসহ প্রমুখ। তবে বৈঠকে কল্যাণ পার্টি এবং লেবার পার্টির কোনও প্রতিনিধি অংশ নেননি।