বিএনপির মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ৫ জন, এগিয়ে তাবিথ

ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের পাঁচ জন নেতা। তাদের মধ্যে হত্যা মামলার আসামি, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা আর গত ডিএনসিসি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীও আছেন। রবিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আগ্রহীরা।
এদিন প্রথমে মনোনয়নপত্র নেন বিএনপির সহ-প্রকাশনা সম্পাদক ওয়াহেদ শাকিল। এরপর একে একে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এমএ কাইয়ুমের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জু ও বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন। সবশেষে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন গত ডিএনসিসি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
মনোনয়ন সংগ্রহকারী পাঁচ জনের মধ্যে এমএ কাইয়ুম বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি ইতালির নাগরিক তাভেল্লা সিজার হত্যা মামলার আসামি। মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বর্তমানে বিএনপিতে কোনও পদে নেই। তাকে একবার বিএনপি থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ প্রসঙ্গে মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানাই, তিনি আমাকে মনোনয়পত্র সংগ্রহের সুযোগ ও জমা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। পরিবর্তনের সময় আসছে। ২০১৮ সাল পরিবর্তনের বছর, পরিবর্তন হবেই।’

মনোনয়ন সংগ্রহকারীদের মধ্যে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাবিথ আউয়ালের। গত ডিএনসিসি নির্বাচনে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি। মনোনয়ন সংগ্রহ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তার মুখে শোনা গেলো, ‘গত নির্বাচনে দল আমাকে সমর্থন দিয়েছিল। ওইবার আমার কাজকর্মে দল সন্তুষ্ট হয়েছে বলে মনে করি। তাই আমি বেশ আশাবাদী— এবারও ডিএনসিসি নির্বাচনে মনোনয়ন পাবো।’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবিভক্ত ঢাকা নগর থাকতেই মেয়র পদে নির্বাচন করতে খালেদা জিয়ার কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম। ঢাকা বিভক্ত হওয়ার পরও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে বরাবরই আগ্রহ ছিল আমার। এবারও আমি দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। আমার পড়ালেখা, অভিজ্ঞতা, সাংগঠনিক পরিচয় ও যোগ্যতা মিলিয়ে দল বিবেচনা করবে— এটা প্রত্যাশা করছি।’
তবে মনোনয়ন না পেলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান ও তাবিথ আউয়াল। তাদের ভাষ্য, ‘দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা তার পক্ষে কাজ করবো। এখানে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’

এদিকে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তাবিথ আউয়াল চূড়ান্ত। তিনিই এগিয়ে আছেন। কেবল আনুষ্ঠানিকতার জন্য মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হয়েছে।’

জানা গেছে, সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকাল ৪টার মধ্যে ২৫ হাজার টাকা জামানতসহ মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এরপর রাত সাড়ে ৮টায় মনোনয়ন সংগ্রহকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে বিএনপি’র মনোনয়ন বোর্ড। এর সভাপতি হিসেবে আছেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। মনোনয়ন যাচাই-বাছাই হবে ২১ ও ২২ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৯ জানুয়ারি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি। এবারই প্রথম এই নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে।