খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাওয়ার বিপক্ষে বিএনপি

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষ মত দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। তাদের মতে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দল নির্বাচনে অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে সাজাঘোষিত দুর্নীতি মামলাকে দলীয়ভাবে মেনে নেওয়ার সামিল। তারা মনে করেন, খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির দায়ে নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই কারাবন্দি করেছে সরকার। এ কারণে খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করেই নির্বাচনে অংশ নিতে চায় বিএনপি। সোমবার (১৩ আগস্ট) বিকালে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের বৈঠকে এই বিষয়ে অভিমত উঠে আসে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য  জানান।

সূত্র জানায়, বৈঠকে উপস্থিত নেতারা খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিপক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলেন, বিএনপি এতদিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠক ও সভা-সমাবেশে বলেছে, খালেদা জিয়াকে সরকার প্রতি হিংসাপরায়ণ হয়ে কারাবন্দি করে রেখেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলেছে, রাজনৈতিক কারণে নয়, দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। এখানে সরকারের কোনও হাত নেই। তাকে ছাড়াই বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে বলেও আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন। এখন যদি বিএনপি দলীয় চেয়ারপারসন ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলেই তার দুর্নীতির বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হবে। এতে আওয়ামী লীগের দাবিই প্রতিষ্ঠিত হবে।   

এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৈঠকে খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। কারণ এই সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রেখেছে।’

দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর একজন সদস্য বলেন, বিএনপির এখন লক্ষ্য হচ্ছে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা, নিরপেক্ষ সহায়ক সরকাররের দাবি আদায় করা, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে কীভাবে সরকারকে বাধ্য করার বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আর এসব দাবি আদায় করতে হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে। এজন্য আমাদের টার্গেট ১ সেপ্টেম্বরে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী থেকে কঠোর আন্দোলনে যাওয়া। আওয়ামী লীগও ১৭৩ দিন হরতাল দিয়ে বিএনপির কাছ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আদায় করে নিয়েছিল। তাই বিএনপিকেও দাবি আদায়ে করতে হলে কঠোর কর্মসূচিতে যেতেই হবে।

এ বিষয়ে বিএনপি প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ‘বিএনপির  আগামী দিনের  করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসেন উপদেষ্টা আমার ‍উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।