ভোটাররা কেন্দ্রে এলে এই সরকারের পতন হবে: মওদুদ

 

বক্তব্য রাখেন মওদুদ আহমদ

ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলে এই সরকারের পতন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও সারা বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটি একটি বিরাট সুযোগ। আর কোনও দিন এ ধরনের সুযোগ আসবে কিনা আমি বলতে পারি না। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’

শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে 'গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। আদর্শ নাগরিক আন্দোলন ও জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলন এ সেমিনারের আয়োজন করে।

মওদুদ বলেন, ‘কোনও দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। দলীয় সরকার থাকলে কোনও নির্বাচন কমিশনারের জন্য নিরপেক্ষ কাজ করা সম্ভব নয়। পুলিশ ও সিভিল প্রশাসন কারও পক্ষেই নিরপেক্ষভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। আজ এটা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।’

এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে পুলিশ এখন তাদের কথায় চলবে। কিন্তু বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি পুলিশ সক্রিয়ভাবে এখনও সরকারি দলের কাজ করছে। সিভিল প্রশাসন ও রিটার্নিং অফিসার একজন জেলা প্রশাসক। তিনি নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ঠিকই কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কোনও কর্মকর্তা না। তিনি সরকারের কর্মকর্তা। তার সাধ্য নেই সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া। আমি তাকে দোষ দিচ্ছে না। কারণ, তিনি জানেন তার প্রমোশন-পোস্টিং সব বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাতে। নির্বাচন কমিশন মুখে যত কথাই বলুক, বিশ্বাস করবেন না। মুখে এক কথা মনের মধ্যে অন্য কিছু। তারা জানে প্রশাসনের ওপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। আজ পর্যন্ত কমিশন এমন কোনও প্রশাসন দেখাতে পারেনি, তাদের কথায় পুলিশ কর্মকর্তা বা সিভিল প্রশাসনের কোনও কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।’

মওদুদ আরও বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেবো লড়াই করে ভোট দেবো। এখন অবস্থাটা ওই পর্যায়ে এসে গেছে। বাংলাদেশের অস্তিত্ব, গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সুস্থ ও সভ্য সমাজ গঠনের জন্য একমাত্র পথ এই ভোট।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘গত দুদিনে আমাদের তিনজন প্রার্থীকে জেলখানায় পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার আরও বাড়বে এবং গায়েবি মামলা চলতেই থাকবে। গতকাল শুনলাম আমার এলাকায় চারটা বিরাট পুলিশ বাহিনী এসেছে ট্রাকে করে। তারা বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। যাতে কোনও বিএনপি নেতা-কর্মী-সমর্থক বাড়িতে থাকতে না পারেন। আর থাকলেও গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে। তারা এমনটি করছে এ কারণে যে, এ সরকার জানে যত কলাকৌশল, নীলনকশা ও পরিকল্পনাই তারা করুক, মাঠপর্যায়ে তাদের ভোট নেই।’

জাতীয় মানবাধিকার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।