মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে পূর্ব ঘোষিত বিএনপির র্যালি পুলিশ করতে না দেওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে করেন মির্জা ফখরুল।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে দেখা যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপির কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের বের হতে বারবার নিষেধ করতেও দেখা গেছে।
ভারতের নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের সংসদের খুব পরিষ্কার করে বলা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। এটা নাকি বিএনপির আমলে হয়েছে। নতুন নাগরিকত্ব বিলে বলা হয়েছে, অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু মুসলিমদের দেওয়া হবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন,‘মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আমাদের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটা র্যালি বের হওয়ার কথা ছিল। সেভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নেতাকর্মীরা কার্যালয় থেকে যেন নিচে না নামে।’
বিএনপি এই মুহূর্তে কোনও সংঘাতে যেতে চায় না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অধিকারগুলোর কথা বলছি। আপনার দেখেছেন, সভা-সমাবেশ করতে হলে অনুমতি নিতে হয়। এমনকি সাংগঠনিক কার্যক্রম করতেও অনুমতি নিতে হয়।দলীয় রাজনীতি ঊর্ধ্বে সারাবিশ্বে স্বীকৃত মানবাধিকার। সেই মানবাধিকার রক্ষা করতে আজ র্যালি করার কথা ছিল।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী গত ১০ বছরে ১৫৯৯ জনকে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা এর নাম দিয়েছে বন্দুকযুদ্ধ। বিএনপির হিসাবে এ সংখ্যা ২ হাজারও বেশি।এক লাখের ওপর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মামালা দেওয়া হয়েছে। আজ দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে যে ব্যক্তি ভিন্ন মত পোষণ করে তাকে হয় গ্রেফতার করা হয়, না হয় গুম করা হয়।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘গার্মেন্ট শ্রমিক, বিদেশে নারী শ্রমিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, কিন্তু সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।’
অনুমতি না থাকায় র্যালি করতে দেয়নি পুলশি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিএনপিকে র্যালি করতে দেয়নি হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনুমতি না থাকায় তাদের র্যালি করতে দেওয়া হয়নি।
মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার এনামুল হক বলেন, ‘আজ সরকারি অফিস আদালত খোলা। ঢাকা শহরে অনেক যানজট। এরমধ্যে র্যালি করলে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হবে। যেহেতু বিএনপির র্যালি করার অনুমতিও নেই, তাই র্যালি করতে দেওয়া হবে না। তারপরও যদি করতে চায় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর দাবি, ‘আমরা পুলিশকে জানিয়েছি তারপরও মানবাধিকার দিবসের মতো দিনে তারা র্যালির মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও করতে দিচ্ছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান প্রমুখ।