পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়ার জামিন ইস্যু, সংগঠন গোছাতে চায় বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকবিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন কি না,  সে বিষয়টি নিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ করছে দলটি। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন না হলে করণীয় কী হবে, তা ঠিক করতে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি)  রাতে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কিন্তু দীর্ঘ  বৈঠক শেষেও তারা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তবে, সংগঠন গোছানোর বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া দলের স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জানান, খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির বিষয়ে  খুব একটা প্রত্যাশা দেখছেন না তারা। সেক্ষেত্রে আদালত কী সিদ্ধান্ত দেন, তা পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা বলছেন, আগে শুনানি হবে, আদালত রায় দেবেন, এরপরই স্পষ্ট করে দলীয় অবস্থান তুলে ধরা হবে।

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিন হবে না। তবু, চেষ্টা করছি। মানুষ তো জানে, কী হচ্ছে!’

জামিন না হলে কোনও কর্মসূচি দেওয়া হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে এই নেতা বলেন, ‘না এখনই এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী কমিটির প্রভাবশালী একজন সদস্য জানান, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সব পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় জেলা-উপজেলা, নগর-মহানগর কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন করে, যে সব জায়গায় এখনও কমিটি  হয়নি, সেসব এলাকায় কমিটি গঠনের কাজ করা হবে। এরপর কাউন্সিলের প্রস্তুতি শুরু হবে। সারাদেশে কাউন্সিলর ঠিক করার পর  দল গোছানোর বিষয়ে চূড়ান্ত নেবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে, ঠিক কবে নাগাদ কাউন্সিলের প্রস্তুতি শুরু করা হবে, তা বলতে নারাজ এই নেতারা।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিক বিষয় ও খালেদা জিয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নমিনেশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংগঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের বিষয় এখানে আলোচনা হয়েছে। কৌশল নির্ধারণ ও দল পুনর্গঠন করতে চাই, এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

কাউন্সিলের প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এ পর্যন্ত আলোচনা এখনও আসেনি। জেলা ধরে কাজ হবে, কোথায় কী হচ্ছে, না হচ্ছে, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তবে আরেক সদস্য ইঙ্গিত দেন, এ বছরই কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের চিন্তা করা হচ্ছে।

এরআগে, শনিবার বিকাল ৪টা থেকে টানা ৪ ঘণ্টা স্থায়ী কমিটির টানা বৈঠক হয় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। আলোচনায় রবিবার উচ্চ আদালতের শুনানিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।

বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব গণমাধ্যমকে কোনও ব্রিফিং করেননি তারা। সাংবাদিকরা বিকেল থেকে অপেক্ষা করলেও রাত আটটার দিকে ফিরে যান তারা।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিফ না করার বিষয়ে চেয়াপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান  বলেন, ‘বৈঠক মুলতবি রয়েছে, তাই ব্রিফ করা হয়নি।’ পরবর্তী বৈঠকের তারিখে পরে জানানো হবে বলেও তিনি জানান।