শনিবার (১৩ জুন) দুপুরে বিএনপির করোনা সেলের পক্ষ থেকে উত্তরার নিজ বাসা থেকে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
দলের বিভিন্ন আঞ্চলিক বিভাগ অনুযায়ী নেতাকর্মীদের আক্রান্তের হিসাব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল জানান, রাজশাহী বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে আক্রান্ত ২৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের, কুমিল্লা বিভাগে আক্রান্ত ১৯ জন এবং মৃত্যু ১৩, ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত ৪১ জন এবং মৃত্যু ২৭, ময়মনসিংহ বিভাগে আক্রান্ত একজন এবং মৃত্যু এক, খুলনা বিভাগে আক্রান্ত সাত জন, সিলেট বিভাগে আক্রান্ত আট জন এবং মৃত্যু দুই, ফরিদপুর বিভাগে আক্রান্ত ১৪ জন এবং মৃত্যু এক। অর্থাৎ, মোট আক্রান্ত ১২১ জন আর মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের।
এই সময় তিনি করোনাভাইরাসে মৃত্যু হওয়া চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য, ব্যাংকার, শিক্ষক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী এবং দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি গভীর শোক এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
সরকারের ব্যর্থতায় দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের চরম অবহেলা ও দায়িত্বহীন আচরণে দেশে কোভিড-১৯ ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি হিসাবে দেশে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে, আক্রান্ত প্রায় লাখের কাছে। বেসরকারি বা অন্যান্য সূত্রে আক্রান্ত ও মৃত্যর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উপেক্ষা করে লকডাউনের পরিবর্তে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনগণের সঙ্গে তামাশা করা হয়েছে। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে সরকার।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে ২ মে থেকে এখন পর্যন্ত ৫৯৯ জন রোগী মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ ছিল ১৩৯ জনের। বাকিদের করোনা পরীক্ষাই করা হয়নি। করোনা পরীক্ষার বাইরে উপসর্গে মৃত ও আক্রান্তদের পরিসংখ্যান সরকারি হিসাবে আসছে না। প্রধানমন্ত্রীর একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসা উপদেষ্টা গণমাধ্যমে বলেছে করোনায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা এবং উপসর্গে মৃত্যুর সংখ্যা ও কারণ প্রকাশ করা জরুরি।’
তিনি জানান, মানুষের আহাজারিতে বাংলাদেশের আকাশ ভারী হয়ে উঠছে। শুধু রাজধানী ঢাকাই নয়, দেশের অনেক জেলায় লাশ দাফন করার জায়গা খালি নেই। শুধু রাজধানীর কবরগুলোতে গত চার মাসে লাশ দাফন হয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ বেশি। আর নারায়ণগঞ্জে এই সংখ্যা দ্বিগুণ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, করোনা মোকাবিলায় সমন্বিত কোনও কাজ করেনি সরকার। বরং সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ঔদ্ধত্য কথাবার্তার মাধ্যমে তারা এই সংকটকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন।