রবিবার (২৮ জুন) দুপুরে উত্তরার বাসা থেকে অনলাইনে জাতীয়তাবাদী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দল আয়োজিত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ কর্মসূচি হয়। এ সময় করোনা প্রতিরোধক ‘আর্সিনিক অ্যালবাম-৩০’ ও ‘ব্রায়ানিয়া অ্যালবাম-৩০’ ওষুধ কয়েক শত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, কয়েকদিন আগে চীনা বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন। তারা এসে ঠিক একই কথা বলেছেন যে বাংলাদেশে সবকিছু এলোমেলো। এখানে কোথায় রোগ আছে সেটাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ তারা (সরকার) চিহ্নিত করতে পারছেন না এবং সেটাকে চিহ্নিত করার জন্য কোনও ব্যবস্থা তাদের নেই।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং গোটা হেলথ সিস্টেম একেবারে ভেঙে পড়েছে, একেবারেই লেজে গোবরে অবস্থা হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য খাতে সরকারের চরম অবহেলা, উদাসীনতার জন্যে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কারণে দেশে করুণ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র গতকাল বলেছেন, আর বিলম্ব না করে এখন রেড জোনভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আপনি দেখুন কতটা সামঞ্জস্যহীনতা হলে, কতটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে এমন হয়। অনেক আগেই বলা হয়েছে দেশে রেড জোন, ইয়েলো জোন, গ্রিন জোন করা হবে। ঢাকা শহরের রেড জোন করে কত অঞ্চল ভাগ করে একদম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে লকডাউন করা হবে। একমাত্র পশ্চিম রাজাবাজার ছাড়া কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমার মনে হয় সরকার জানেও না তারা কী করবেন, কী করতে চাচ্ছে?’
২০২০-২১ অর্থবছরে সরকারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ সবচেয়ে কম। কী দুর্ভাগ্য এই জাতির। আজকে রাস্তায় মানুষ মারা যাচ্ছে। টেস্ট করতে পারছে না, কোনও টেস্ট হচ্ছে না। এরপরেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সাহেবের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র যে কিট উদ্ভাবন করলো সেই কিটকে তারা (সরকার) নাকচ করে দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘মাত্র আড়াই হাজার টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর একটা অনুদান ৫০ লাখ মানুষকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটাও পুরোপুরি দলীয়করণ করার ফলে যাদের পাওয়া উচিত ছিল, তারা পায়নি। তাও সেটা এককালীন।’
ফখরুলের অভিযোগ, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যেটা, তা হচ্ছে অক্সিজেন অপ্রতুলতা, অক্সিজেন কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন নেই।’
হোমিওপ্যাথিক একটি কার্য্কর চিকিৎসা ব্যবস্থা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইংল্যান্ডের রানী এলিজাবেথ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বেঁচে আছেন। তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করেন। বাংলাদেশে তিনি যখন বহুদিন আগে এসেছিলেন তখন সঙ্গে তার হোমিওপ্যাথিক বক্সটিও ছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথম মিরপুরে হোমিওপ্যাথিক কলেজ স্থাপন করেছিলেন। তিনি দিনাজপুরে হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার প্রসারে জায়গাও বরাদ্দ দিয়েছিলেন।’
অনুষ্ঠানে চিকিৎসক দলের সভাপতি ডা. আরিফুর রহমান মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডা. শফিকুল আলম নাদিমের পরিচালনায় সহ-সভাপতি মশিউজ্জামান পান্নু, মজিবুল্লাহ মুজিব, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম জাকির হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী নিজাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।