এর আগে নিজ জেলা টাঙ্গাইল থেকে শাজাহান সিরাজের মরদেহ কিছু সময়ের জন্য ঢাকায় তার গুলশানের বাসার সামনে আনা হয়। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় গুলশান সোসাইটি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে। সেখানে এশার নামাজের পর তার তৃতীয় জানাজা হয়।
জানাজায় অংশ নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে ইতিহাসের আরেকটি পাতা ঝরে পড়লো। জাতির দুর্ভাগ্য, নতুন প্রজন্মকে এ ইতিহাস জানানো হয় না। আমি এ জন্যেই তাকে সালাম জানাতে এসেছি।’
জানাজায় অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মনজু, মরহুমের আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও ঘনিষ্ঠজনরা।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাজাহান সিরাজ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। ২০১২ সালে তার ফুসফুসে ক্যানসার, এরপর মস্তিষ্কে ক্যানসার ধরা পড়ে। অসুস্থতার কারণে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি।
১৯৪৩ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্ম শাজাহান সিরাজের। ষাটের দশকে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের আগে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ‘ছাত্র আন্দোলনের নিউক্লিয়াস’র পক্ষে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন তিনি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে হন জাসদের সংগঠক।
জাসদ ভেঙে কয়েকটি ভাগ হলে একটি অংশের নেতৃত্বে ছিলেন শাজাহান সিরাজ। ১৯৯৫ সালে দল নিয়ে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী হন তিনি। টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। শাজাহান সিরাজের স্ত্রী রাবেয়া খাতুনও বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। তিনি সর্বশেষ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।