মওদুদ আহমদের চলে যাওয়া বিএনপির ক্ষতি: মির্জা ফখরুল

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে প্রয়াণে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের এই সংকটময় মুহূর্তে এবং গণতন্ত্রের সংকটকালে তার চলে যাওয়ার দেশের জন্য, বিএনপির জন্য অত্যন্ত বড় ক্ষতি হয়েছে। তা কখনও পূরণ হওয়ার নয়।’

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় মওদুদ আহমদের মরদেহ গ্রহণের আগে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রথম পোস্ট মাস্টার জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। মওদুদ আহমেদ চলে যাওয়ায় সমগ্র জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আমি মনেকরি এটা শুধু বিএনপির জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য ক্ষতি হয়েছে।’

গত ১৬ মার্চ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন দেশের খ্যাতনামা আইনজীবী মওদুদ আহমদ৷ আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৬টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে তার মরদেহ। দলের সিনিয়র নেতারা তার মরদেহ গ্রহণ করেন এবং ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

মওদুদ আহমেদ ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তিনি ভাষা আন্দোলন করেছেন। এই সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করেছেন। তিনি আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশ প্রায় প্রতিটি সংসদে মওদুদ আহমেদ ছিলেন। সংসদে তার ওপর অর্পিত প্রতিটি দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন।’

‘মওদুদ আহমদের শূন্যতা কখনও পূরণ হওয়ার নয়’ উল্লেখ করেন ফখরুল বলেন, ‘তার মতো মানুষ খুব কম আসেন। এরা সব সময় সমাজের প্রতি যে দায়বদ্ধতা তা পালন করেন। যা আমরা কখনও অস্বীকার করতে পারি না।’

বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, ‘অন্যায়ভাবে মওদুদ আহমেদকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে, কারাগারে যেতে হয়েছে। তার বাড়িটা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা রয়েছে।’

উল্লেখ্য, আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পর ২০১৭ সালের ৭ জুন গুলশান–২ নম্বরের ১৫৯ নম্বর বাড়িটি মওদুদ আহমদকে ছাড়তে হয়। রাজউকের সম্পত্তি শাখা বাড়িটি বুঝে নিয়ে ভেঙে ফেলে। এই বাড়িটিতেই দীর্ঘদিন বসবাস করেছেন মওদুদ আহমদ।

এসময় বিমানবন্দরে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, ডা. জাহিদ হেসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবেদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটি সদস্য আব্দুল লতিফ জনি, বজলুল করিম চৌধুরীর আবেদ, ঢাকা উত্তর সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।