লকডাউনের নামে ক্র্যাকডাউনে নেমেছে সরকার: মির্জা ফখরুল

‘লকডাউনের নামে সরকার বিরোধীদল দমনে ক্র্যাকডাউনে নেমেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এই লকডাউনকে কেন্দ্র করে তারা (সরকার) একটা ক্র্যাকডাউনে নেমেছে। ক্র্যাকডাউনে নেমে তারা আমাদের দলের নেতাকর্মী, অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে, হয়রানি করছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে।’

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এসব অভিযোগ করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ক্র্যাকডাউনের এই সুযোগটা (লকডাউন) নিয়ে তারা (সরকার) বিরোধী দলের বাড়িতে হামলা করছে। সারাদেশে দলের নেতাকর্মীরা কেউ বাড়িতে থাকতে পারছে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে আমাদের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন এবং তাদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করুন। দেশে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করুন, গণতান্ত্রিক স্পেস তৈরি করুন।’

তার মন্তব্য, ‘অন্যথায় এর খেসারত আপনাদের অবশ্যই দিতে হবে। এর দায়-দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে।’

২৬ মার্চে স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তীর দিন থেকে নানা ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করতে শুরু করেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, বিভিন্ন সংগঠনের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক অভিযানসহ রাতে গ্রেফতার অভিযান তারা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা যে হিসাব পেয়েছি, তাতে বিএনপির ১৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাবনায় একজন গ্রেফতার হওয়ার পরে তার মৃত্যু হয়েছে। আমাদের ছাত্র দলের গ্রেফতার হয়েছেন ৮১ জন। যুবদলের গ্রেফতার হয়েছেন ৩০ জন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের ১১ জন গ্রেফতার হয়েছেন। আগে গ্রেফতার হওয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু গতকাল জামিনে মুক্ত হলেও জেলগেট থেকে গ্রেফতার করে আবার পুলিশ নতুন করে মামলা দিয়েছে। আমাদের দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীকেও একভাবে নতুন করে আরেকটি মামলায় জড়িয়ে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।’

সরকার হেফাজত ইসলামকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির ওপর নির্যাতন বাড়াচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে একটা কর্তৃত্ববাদী একদলীয় সরকারকে পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যে তারা শুধু বিএনপি, বাম জোট, ইসলামী দল, হেফাজত বা অন্যান্য দল নয়; সবার ওপরে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। যাতে করে কোনও বিরোধী কন্ঠ উচ্চারিত না হয়, ভিন্ন মত না আসে–এটাই হচ্ছে তাদের প্রধান লক্ষ্য।’