খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে ফখরুলের আহ্বান

ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পোস্ট-কোভিড নানা জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় ‘মানবিক’ কারণে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) এক অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির উদ্যোগে সারাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রামণে নিহত দলীয় নেতাকর্মীদের পরিবারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে মহানগর বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মীর পরিবারকে ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোভিডোত্তর যে পোস্ট-কোভিড জটিলতা হয়, সেই জটিলতা কিন্তু মাঝে মাঝে টার্ন নেয় বিভিন্ন দিকে। উনার (খালেদা জিয়ার) যে বয়স, বিভিন্ন রোগ আছে, এর আগে প্রায় তিন বছর কারাগারে ছিলেন, এখনও তিনি অন্তরীণই আছেন। এই অবস্থার প্রেক্ষিতেই তার জটিলতা সৃষ্টি।’

তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমাদের দেশের প্রায় বেশির ভাগ মানুষের  ইচ্ছা যে, তাঁর চিকিৎসাটা উন্নত কোনও হাসপাতালে হওয়া উচিত। বাংলাদেশে উন্নত হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। আরও উন্নত বিদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব কিনা। আপনারা  জানেন যে, গতকাল তার পরিবার থেকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, সরকার মানবিক কারণে তার বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন এবং এই দেশের ১৮ কোটি মানুষের সবচেয়ে প্রিয় নেতার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিতি দলের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকবৃন্দখালেদা জিয়ার চিকিৎসার অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা জানেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া গত ২৭ এপ্রিল থেকে এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন র‌য়েছেন। তাঁকে এখানে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং আমাদের চিকিৎসকরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে তাঁর চিকিৎসা করছেন।’ তিনি বলেন, ‘নিজেদের নেতাকে সুস্থ দেখতে চাওয়া বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার।’

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা জন্য পাঠাতে অনুমতি চেয়ে আবেদনপত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে পৌঁছে দেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।

কর্মসূচি

খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় শুক্রবার বাদ জুমা সারাদেশে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও বিভিন্ন উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল শুক্রবার পবিত্র জামাতুল বিদা দিন আছে। সারাদেশের মসজিদ ও বিভিন্ন ধর্মের প্রার্থনালয় যেগুলো আছে, সেগুলোতে আমাদের ইউনিটগুলো খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তির জন্য দোয়া অনুষ্ঠান করবে, প্রার্থনা সভা করবে। আমি সব ইউনিটের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ করছি, তারা যেন জনগণকে নিয়ে দেশনেত্রীর রোগমুক্তির জন্য দোয়া চাইতে পারে।’

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রামণ মোকাবিলায় ‘সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা এবং ভ্যাকসিন সংগ্রহ নিয়ে দুর্নীতি’র কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত সারাদেশে ৪২৫ জন নেতাকর্মীরা মারা গেছেন বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

কেন্দ্রীয় দফতরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বিএনপির হাবিব উন নবী খান সোহেল, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, যুব দলের এসএম জাহাঙ্গীর, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপন উপকমিটির নেতা আতিকুর রহমান রুমন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস সেখানে উপস্থিত ছিলেন।