খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও ক্রিটিক্যাল: মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও ‘ক্রিটিক্যাল’ বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এখনও ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে আছেন তিনি (খালেদা জিয়া)। যদিও আল্লাহর রহমতে অনেক ইমপ্রুভ করেছেন। এখন তিনি রুম এয়ারে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছেন। অর্থাৎ রুমের মধ্যে তার অক্সিজেন লাগছে না।’

মঙ্গলবার (১১ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এ তথ্য জানান। খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তার প্রেসার, টেম্পারেচার, অক্সিজেন যেটাকে স্যাচুরেশন বলে এগুলো এখন আপাতত আল্লাহর হুকুমে কিছুটা নরম্যালের দিকে চলে এসেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘তার মূল কতগুলো বিষয় আছে যে বিষয়গুলো এখনও বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে আছে। তার কিডনির সমস্যা আছে— দ্যাটস এ রিয়েল প্রবলেম। তার হার্টের সমস্যা আছে। যেটা নিয়ে ডাক্তাররা এখনও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আছেন, তারা চেষ্টা করছেন, তারা দোয়া করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে, এভারকেয়ার হাসপাতাল সর্বাত্মক আন্তরিকতা নিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করছেন। তারা কোনও কিছু বাকি রাখছেন না। এমনকি তারা বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসছেন প্রতিনিয়ত। দেশের বাইরেও তারা যোগাযোগ রাখছেন বড় বড় চিকিৎসকদের সঙ্গে, সেভাবে তারা এখানে চিকিৎসা করার চেষ্টা করেছেন।’

ফখরুল বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটা আপনারা জানেন—ইভেন দি প্রাইভেট হসপিটালস আর নট প্রপারলি ইক্যুইপড। একমাত্র এভারকেয়ার হাসপাতাল সবচেয়ে বেশি টেকনোলজিক্যাল দিক থেকে উন্নত। তারপরেও ইনাফ না। ওরা নিজেরাই মনে করে যে অনেক লিমিটেশনস আছে। সেই লিমিটেশনগুলো দেখে উনার পরিবার উনাকে বাইরে নেওয়ার আবেদন করেছিল।’

করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসকরা ওই সময়ে খুবই সংযত ভাষায় কথা বলেছেন। উনার অবস্থা ওই সময় স্থিতিশীল ছিল। হাসপাতালে আসার পর উনার পরিবার যখন বাইরে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল, তখন দেশনেত্রীর অবস্থা ভেরি ডিফিকাল্ট ছিল। ইট ওয়াজ ভেরি ক্রিটিক্যাল। ডাক্তাররা পর্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। যে কারণে তারা একটা রিপোর্টও দিয়েছিলেন যে তার অবস্থা ভেরি ক্রিটিক্যাল। আমাদের এখানে যে ব্যবস্থাগুলো আছে, সেটা ইনাফ নয়।  সেজন্য তারা মনে করেছেন যে, যদি বাইরে চিকিৎসাটা নেওয়া হয় তাহলে ভালো হবে।’

উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের আবেদনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই আবেদন করার পর পর তারা (সরকার) এমনভাবে কথা বললেন যে, সবাই আশাবাদী জনগণসহ সকলে যে, দিয়ে দেবে। ওটাই আশা করে যে, একজন অসুস্থের সঙ্গে কেউ রাজনীতি করতে চায় না, দিয়ে দেবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে হঠাৎ করে তাদের টোন বদলে গেলো। তারা বলে দিলেন যে আমরা দিতে পারছি না। কেন পারছেন না সে ব্যাপারে তারা যে যুক্তিগুলো দিলেন, সেই যুক্তিগুলো একেবারেই অগ্রহণযোগ্য, খোঁড়া যুক্তি।’

সরকারের কোনও শর্ত ভঙ্গ করেননি

গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়ার মুক্ত হওয়ার পর তিনি সরকারের দেওয়া শর্তাবলি ভঙ্গ করেননি দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি যখন বাসায় কোয়ারেন্টিনে ছিলেন, একদিনের জন্যও তাদের শর্ত ভঙ্গ করেননি। উনি একদিনের জন্যও ঘরের বাইরে যাননি, বাসার বাইরে যাননি। কোথাও কোনও বক্তব্য দেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়তো মাঝে মধ্যে আপনাদের বলেছি যে উনি আপনাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন। উনি কিন্তু নিজে কোনোদিন, এমনকি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে হাতও নাড়াননি।’

খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে আবারও দোয়াও চান মির্জা ফখরুল।

ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনা মহামারির এই দুঃসময়েও ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দোয়া করছি যেন গোটা বিশ্ব ও গোটা জাতি করোনামুক্ত হতে পারে এবং ফ্যাসিস্ট যে আগ্রাসন তা থেকে মুক্ত হতে পারে।’