নতুন সমীকরণে বিএনপি, শিগগিরই দৃশ্যমান

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপট বিবেচনা এবং দেশে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন কৌশল প্রণয়ন করছে বিএনপি। আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ, নিরপেক্ষ নির্বাচন পদ্ধতির দাবিতে রাজপথে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনাকে সামনে রেখে এ কৌশল প্রণীত হচ্ছে। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক দায়িত্বশীল এ তথ্য জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলছেন, বাংলাদেশে ভোটের অধিকার ফেরাতে বিএনপিকেই কার্যকর প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। না হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে দাবি আদায়ে বাধ্য করা যাবে না। আর এই রাজনৈতিক সংগ্রামে এককভাবেই সামনে আসতে চায় বিএনপি।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের ক্ষমতার উত্থান-পতনের সঙ্গে যুক্ত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে দলীয় ‘সক্ষমতা’কে যাচাই করতে এককভাবেই জাতির সামনে নতুন বাস্তবতা তুলে ধরতে চায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

দলটির সূত্রগুলো জানায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নির্বাচন পদ্ধতিকে সামনে রেখে বিএনপিকে নতুন কৌশল হাজির করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে সারাদেশের তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ পরামর্শের ভিত্তিতে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জোটভিত্তিক রাজনীতির চেয়ে ‘একদলীয়’ নেতৃত্বনির্ভর রাজনৈতিক কৌশলকেই যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে।

বিএনপির দায়িত্বশীলরা জানান, নতুন কৌশল কী হবে, কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে; কবে নাগাদ সামনে আসবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে দলের হাইকমান্ড বেশি সময়ও নিতে অপারগ। সেক্ষেত্রে শিগগিরই নতুন এই সমীকরণের দেখা পেতে পারে বাংলাদেশের রাজনীতি।

সূত্রের ভাষ্য, বিএনপির নেতারা এখন বিশ্বাস করেন, রাজপথের আন্দোলন ছাড়া সরকারকে দাবি আদায়ে নমনীয় করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে ভোট ও নির্বাচন পদ্ধতি সুষ্ঠু করার আহ্বান জানানো হবে।

গত কয়েকদিনে রাজধানীতে কয়েকটি অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যের বক্তব্যেও এর রেশ এসেছে।

বিএনপির সঙ্গে সুসম্পর্কের সূত্রপাত হয়েছে, এমন একটি দলের প্রধান রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি জোটের বিষয়ে কোনও আহ্বান রাখা হয়নি। ‘ব্যক্তি টু ব্যক্তি’ কোনও বৈঠকও হয়নি। তবে, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিএনপিকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। এখন দেখা যাক, তারা কোন পদ্ধতি সামনে আনছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভোটের অধিকার ফেরাতে হলে আন্দোলন লাগবে। দল কী করবে, এসব নিয়ে আমাদের আলোচনা চলছে। এখনও সবকিছু ডিসাইড হয়নি। ধীরে ধীরে এগুলো সামনে আসবে।’