নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আইন ‘পচা কদু’ হতে যাচ্ছে: বিএনপি

নির্বাচন কমিশন নিয়োগে মন্ত্রিসভায় যে আইনের খসড়া অনুমোদন হয়েছে তা ‘পর্বতের মূষিক প্রসব’ বা একটি ‘পচা কদু’ হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান একথা জানান।

তিনি বলেন, অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনি রূপ দেওয়ার সরকারি অপপ্রয়াসের ফলাফল হবে ‘যেই লাউ, সেই কদু’। এবার সম্ভবত হতে যাচ্ছে একটি পচা কদু।

‘এটা পর্বতে মূষিকের’ চেয়ে বেশি কিছু প্রসব করবে না। এতদিন ধরে যেটা প্রশাসনিক কায়দায় হয়েছে এখন সেটা আইনি কায়দায় হবে। আমরা এ জন্য বলেছি যে ‘যেই লাউ, সেই কদু’—যোগ করেন নজরুল ইসলাম।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, পচা কদু এ জন্য বলছি যে খসড়া আইনে প্রস্তাব করা হয়েছে, সরকারি চাকরির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ছাড়া কেউ এটার সদস্য হতে পারবেন না। অর্থাৎ সিভিল সোসাইটির কেউ অথবা কোনও শিক্ষাবিদ, আইনজ্ঞ কেউ সদস্য হতে পারবেন না। দুনিয়ার কোথায় এরকম বিধিনিষেধ আছে?

খসড়া আইনের সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিনা ভোটের অনির্বাচিত একটি অবৈধ সরকারের কাছ থেকে জনগণ এরচেয়ে বেশি কিছু প্রত্যাশা করে না। জনগণ মনে করেন, একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন, যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের নৈতিক যোগ্যতা ও সামর্থ্য আছে শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের।

প্রসঙ্গত, সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। চলতি অধিবেশনে বিলটি পাসের জন্য সংসদে উপস্থাপন করবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এর আগে সোমবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এতে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন কমিশন গঠনে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত খসড়া আইন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়

নজরুল ইসলাম খান বলেন,  আমরা তো এই সরকারের এবং এই সরকারি প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করতে রাজি না। যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না তারা গণবিরোধী এবং তাদের সাজানো যে প্রশাসন তার অধীনে কোনও নির্বাচনে আমরা যাবো না।

 রাষ্ট্রপতির সংলাপ অর্থহীন

নজরুল ইসলাম খান বলেন, একদিক থেকে রাষ্ট্রপতির কোনও ক্ষমতা নাই, যারা গেছেন তাদেরও কোনও ক্ষমতা নেই। এই সংলাপ অর্থহীন এটা ইতিহাস প্রমাণ করে। এই সংলাপে কোনও কিছুই অর্জিত হয়নি, বরং ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি সংলাপ আহ্বান করলেন। অনেকেই গেলেন, নানা প্রস্তাব করলেন। একজন খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারেও বলেছেন। কিন্তু এর কোনও কিছু কি আমরা দেখলাম? রাষ্ট্রপতি কী প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব করেছেন যে আপনি একটা আইন করেন। অর্থাৎ সংলাপের জায়গায় সংলাপ, সিদ্ধান্তের জায়গায় সিদ্ধান্ত। উনাকে (রাষ্ট্রপতি) সংলাপ করতে দিয়ে মন্ত্রিসভা আইন প্রণয়নের কাজ করেছে। কাজেই এই সংলাপের কোনও অর্থ নেই।