‘সরকার এতদিন সংসার করে এখন কাবিন করছে’, ইসি গঠন আইন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর

সিইসি ও ইসি নিয়োগে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘এতদিন তারা (সরকার) বিনা কাবিনে সংসার করেছে, এখন কাবিন করে এটাকে জায়েজ করতে চাইছেন।’

শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া নাগরিক ফোরামের (জিনাফ) ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, সুচিকিৎসা এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও ন্যায় বিচারের দাবি’তে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

এসময় তিনি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মাঝখানে (কিছুদিন আগে) আইনমন্ত্রী বললো, আইনটি তাড়াতাড়ি করা সম্ভব নয়। অথচ তারা ঠিকই তাড়াহুড়ো করে আইন করলো। এই আইনে তারা নির্বাচন কমিশনের আগের কার্যক্রমকে বৈধতা দিয়ে ইনডেমনিটি সুবিধা দিয়েছে। ফলে তাদের বিগত কর্মকাণ্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। এভাবে সরকার কমিশনের বেআইনি কাজের বৈধতা দিয়েছে। এই আইনের ফলে মনে হলো, এতদিন তারা যা করেছেন তা বেআইনি। এখন তারা একই কাজ করবেন এবং তা এই আইনের নাম দিয়ে। অর্থাৎ এতদিন তারা (সরকার) বিনা কাবিনে সংসার করেছে, এখন কাবিন করে এটাকে জায়েজ করতে চাইছে। কিন্তু যতদিন বিনা কাবিনে সংসার করেছেন তার বিচার আদালতে না হলেও মানুষের মনে ঠিকই থাকবে।’

‘বিএনপির রাস্তায় নামার মুরোদ নেই’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘তারপরও ১৪৪ ধারা দেন কেন? এখন আবার ঘরে বসে বিধিনিষেধ দিয়েছেন।’

এসময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, পৃথিবীতে কোনও দেশে রিজার্ভ চুরির উদাহরণ নেই। যা চুরি হয়েছে তা একমাত্র বাংলাদেশে। কিন্তু এই চুরিতে সরকার জড়িত না থাকলে কেন তারা জড়িতদের খুঁজে বের করে না? কেননা এর সাথে তারাও জড়িত। এত লোক ধরা হয়, কিন্তু সাগর-রুনির খুনিদের ধরা হয় না; এর মানে সরকার তাদের চেনে। তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ইচ্ছা করেই তাদের ধরে না।’

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে- এমন কথায় পশু-পাখিরাও বিব্রতবোধ করে। আপনারা তা নিয়ে কেন কথা বলেন না? আগামী নির্বাচনের আগে ইভিএম মেশিন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হবে। যার যার ভোট তারা দিবে। ব্যালটে ভোট দিবে। তাতে বিএনপি জিতলে জিতবে কিংবা হারবে। কিন্তু সে হারে লজ্জা নেই বরং ভোট চুরি করায় লজ্জা আছে। সরকারকে একটা কথাই বলবো, যেভাবেই থাকেন সবার সাথে মিশে থাকতে পদত্যাগ করে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তাহলে জনমনে থাকতে পারবেন। সরকারের পতন অনিবার্য।

লায়ন মিয়া মোহা. আনোয়ারের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আহবায়ক আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক এড.আব্দুল সালাম আজাদ, জিয়া নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক কে এ জামান প্রমুখ।