আমন্ত্রণ ছাড়াই বিএনপির অনশনে জামায়াত, পিটুনির শিকার কয়েকজন

আমন্ত্রণ ছাড়াই বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটির প্রতীকী অনশনে অংশ নিয়েছে জামায়াত। আর কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপির অনুসারীদের হাতে পিটুনির শিকার হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী এই সংগঠনটির কিছু নেতাকর্মীও।

শনিবার (২ এপ্রিল) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত অনশনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির আয়োজকরা জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ জানিয়ে আয়োজিত অনশনে কয়েকটি দলের প্রধানকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ২০ দলীয় জোটের কিছু শরিক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনও-কোনও নেতা অংশগ্রহণ করেন। তবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানানো না হলেও সংগঠনটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল অনশনে অংশগ্রহণ করেন। তার উপস্থিতির কারণে সঙ্গে থাকা কিছু নেতাকর্মীও অনশনে আসা বিএনপির অনুসারীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছে। তবে, ঠিক কতজন আহত হয়েছে, তা জামায়াতের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়নি।

আয়োজক বিএনপির ঢাকা মহানগরের দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম শনিবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এখানে আমন্ত্রণের কিছু নাই। সবাই যার যার মতো একাত্মতা জানাতে এসেছে। তবে জামায়াতকে আমন্ত্রণ জানাইনি।’

বিএনপির দায়িত্বশীল উইং থেকে বলা হচ্ছে, কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, স্থায়ী কমিটির কোনও সদস্যের পরামর্শে জামায়াতনেতা বুলবুল অনশনে যেতে পারেন। পরে সেখানে তাকে বক্তব্য দিতেও দেখা যায়।  অবশ্য বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপিকে মোবারকবাদ জানান বুলবুল। তিনি বলেন, ‘বিএনপি মাঠের কর্মসূচিতে নেমেছে। এজন্য আমরা মোবারকবাদ জানাই।’image(8)

প্রত্যক্ষদর্শী একজন সংবাদকর্মী জানান,  বিএনপির অনশনে নূরুল ইসলাম বুলবুল যোগ দিতে গেলে তাকে ফুটপাতে চেয়ারে বসতে বলা হয়েছিলো। এসময় বিএনপির অনুসারী কয়েকজন বুলবুলের ওপর চড়াও হয়। এতে বুলবুলের সঙ্গে থাকা কয়েকজন আহত হন, তাদের পাশের একটি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয় চিকিৎসা দিতে। হামলার পরে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে অনশনে যোগ দেন নূরুল ইসলাম বুলবুল।

অনশনে অংশগ্রহণ করেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেছি। ওই সময় আমি স্টেজে ছিলাম। এটা সম্ভবত, বুলবুল ভাই বক্তব্য দিয়ে যাওয়ার পর ঘটেছে, যতদূর শুনেছি। আজকে জোটের যারা গিয়েছেন, তারা বিএনপির আমন্ত্রণেই গেছে বলে জানি। আমাকে জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জামায়াতকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে, তাদের কে দাওয়াত দিয়েছে, সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না।’

মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানান, তিনি অনশনে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতনেতা সাঈদীসহ কারাগারে থাকা আলেমদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।মারধরে আহত জামায়তকর্মীদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য সিএনজিতে ওঠানো হচ্ছে

অনশনে অংশ নিয়েছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি জানান, বিএনপির আমন্ত্রণেই তিনি অনশনে যোগ দেন। বিএনপির কোনও প্রোগ্রামেই তিনি আমন্ত্রণ ছাড়া যাননি।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে জামায়াতের ঢাকা মহানগরের একাধিক সিনিয়র নেতাকে ফোন করলে তারা মন্তব্য রাজি হননি। এছাড়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগে যোগাযোগ করা হলেও কোনও সাড়া মেলেনি।

আরও পড়ুন:

‘এসবই জামায়াতের ফাইজলামি’, খন্দকার মোশাররফ ও দুদুর ক্ষোভ