‘নির্বাচনে যাবো না’ মনোবল নিয়ে ঘুমিয়ে থাকলেও সরকারের পতন হবে’

আসন্ন সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো যদি দৃঢ় মনোবল নিয়ে বাড়িতে ঘুমিয়েও থাকে, তাহলেও শেখ হাসিনার সরকার থাকতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

শনিবার (৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই সরকার উন্নয়নের নামে যত টাকা ধার-কর্জ করেছে, তার সিংহভাগ টাকা লুটপাট করে বিদেশ পাচার করেছে। সেই টাকার আসল  না দিলেও সুদ দিতে হবে আগামী দুই বছর পরে। এই সুদের টাকা জোগান দেওয়া বর্তমান সরকারের পক্ষে কখনও সম্ভব হবে না। সে কারণে জিনিসের দাম কমানোও যাবে না। মানুষের হাহাকার এবং যে অভাব-অনটন দেখা দিয়েছে, সেটা তীব্র থেকে তীব্র হবে। এমনিই কিন্তু তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) মাথা গরম আছে। সুতরাং, আমাদের ওপর আঘাত, গুলি ছুঁড়ে দমন করা সম্ভব হবে না। কারণ, দেশ পরিচালনা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।’

আসন্ন সংসদীয় নির্বাচনে অংশ্রগহণের জন্য শর্তারোপ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবো না। এই সরকারের যে ভোট ডাকাতির পার্লামেন্ট আছে, সেটি কার্যকর রেখে আমরা নির্বাচনে যাবো না। সরকারকে পদত্যাগ করে পার্লামেন্ট বাতিল করতে হবে, নিরপেক্ষ লোক দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে, স্বাধীন ও নির্বাচন কমিশন দরকার হবে এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দিকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এই কাজগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা নির্বাচনে যাবো না— এটাই আমাদের মূল অঙ্গীকার। সেই অঙ্গীকার যদি অন্তরের হয়, আর এই অঙ্গীকারে সবাই যদি আমরা বিশ্বাস করি, এই মনোবল নিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে বাড়িতে ঘুমিয়েও থাকি, তাহলেও শেখ হাসিনার সরকার থাকতে পারবে না। কারণ, আরেকটা নির্বাচন করা তার পক্ষে সম্ভব নাঅ’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের মতো জ্বালাও পোড়াও নাইবা করলাম, হরতাল নাইবা করলাম, এই গাড়ি-ঘোড়ায় আগুন নাইবা দিলাম। আমার কিছুই করার দরকার নেই, শুধুমাত্র এই অবৈধ সরকারের অধীনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা মানুষের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাকে স্বাভাবিক বিমানে নয়, হেলিকপ্টার চড়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ মাত্রই কমবেশি সুবিধাবাদী। আমরা নিজের, দলের সুবিধার কথা বিবেচনা না করে, দেশ এবং জনগণের কথা যদি ভাবি তাহলে আমার মনে হয়, আমরা বিনা যুদ্ধে এই সরকারকে বিদায় দিতে পারবো।’

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামসহ প্রমুখ। /