সর্বত্র নজরদারিতে বিএনপির নেতারা, ‘আটক হতে প্রস্তুত’

১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক নজরদারির মুখে পড়েছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র থেকে শুরু করে ঢাকা ও বাইরের তৃণমূল নেতাদের প্রতি মুহূর্তের কার্যক্রম এখন গোয়েন্দা জালে। দলের সিনিয়র নেতাদের প্রত্যেকের বাসা ও অফিসের সামনে রয়েছে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও অন্যান্য কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

শুক্রবার সকালে স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, ১০ ডিসেম্বর সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুই সপ্তাহ ধরেই সিনিয়র সব নেতার বাড়িতে ও অফিসের সামনে-পেছনে সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের নজরদারি বেড়েছে।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল জানান, গুলশানে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ড. আবদুল মঈন খানের বাসায়, আসাদগেটে ইকবাল হাসান টুকুর বাসভবন, শান্তিনগরে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসা, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বনানীর বাসার এলাকায় অতিরিক্ত নজরদারি রয়েছে।

বিশেষ করে শুক্রবার মধ্য রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আটকের পর বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে গ্রেফতার-আটকের শঙ্কা কাজ করছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক নেতাকেই নজরদারিতে রেখেছে। আমাদের লক্ষ্যে আমরা অনড়। প্রয়োজনে জেলে যাবো। আমরা ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছি। গ্রেফতার আতঙ্ক দিয়ে ১০ তারিখের সমাবেশ বানচাল করা যাবে না।’

শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর নয়াপল্টনে টানা তৃতীয় দিনের মতো ব্যাপক নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করেছে পুলিশ। এদিন সকাল থেকেই নয়াপল্টন, প্রেসক্লাব, কাকরাইল, পুরানা পল্টন এলাকায় পুলিশের বাড়তি নজরদারি ছিল।

বিএনপির মিডিয়া উইং জানায়, শুক্রবার দুপুরের দিকে জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি ফখরুল ইসলামকে জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাব থেকে বের হওয়ার সময় তিনি গ্রেফতার হন।

নয়া পল্টন থেকে আটক হন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুবুল আলম রবিন।শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে নয়া পল্টন এলাকা থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের মধ্যে একজন সরফরাজ, তিনি বিএনপির রূপগঞ্জ থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নাশকতার আশঙ্কা থেকেই ঢাকা শহরের সর্বত্রই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এই অবস্থা পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। এরপর যদি প্রয়োজন পড়ে, তাহলে আরও সময় বাড়ানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘পুরো পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। বিএনপি হোক, জামায়াত হোক; কেউ নাশকতার চেষ্টা করলে, পুলিশের ওপর হামলা করার চেষ্টা করলে একবিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।’