গণতন্ত্রের ভবিষ্যত ও ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে সেমিনার

ইন্দো প্যাসিফিকের প্রাণকেন্দ্রে বাংলাদেশ: বিএনপি

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত ও ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি নিয়ে বিএনপির সেমিনার শুরু হয়েছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল সোয়া ৪টার দিকে রাজধানীর গুলশানের হোটেল লেক শোরে এ সেমিনার শুরু হয়। 

দলের বিদেশ বিষয়ক কমিটির সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় কি-নোট পাঠ করেন কমিটির টিম লিডার ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

কি-নোট পেপারে আমির খসরু মাহমুদ উল্লেখ করেন, ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রাণকেন্দ্রে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিকের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি বঙ্গোপসাগরের মুখে অবস্থিত। স্থলপথে বিশ্বের দুটি মহাশক্তি এবং নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের সঙ্গে এর ভৌগোলিক নৈকট্য দেশটিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভূ-কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

সেমিনারে আমির খসরু বিএনপির ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি তুলে ধরেন। দেশের ভবিষ্যত গণতন্ত্র ও দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)
 
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানসহ আরও অনেকে উপস্থিত রয়েছেন। 

দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, সেমিনারে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটসহ যুগপৎসঙ্গীরাও অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করছেন। 

তিনি বলেন, বিএনপি'র পররাষ্ট্র নীতিতে বাংলাদেশের স্বার্থটা-কে প্রাধান্য দিয়ে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

গত ১৭ বছরে বিএনপি ‘কর্তৃত্ববাদী সরকারের অবর্ণনীয় মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যায়’-এর শিকার হয়েছে দাবি করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ সময়টা ছিল বিএনপি'র জন্য গণতান্ত্রিক নীতিতে অবিচল থাকার প্রতি ধৈর্য প্রদর্শনের চরম পরাকাষ্ঠা। প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি মনে করে জনগণের যে ক্ষমতা অন্যায়ভাবে তাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সেটা পুনরায় জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া তাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলোর যথাযথ সংরক্ষণই ইন্দোপ্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির ভিত্তি পাকা করবে বলে বিএনপি বিশ্বাস করে।’

আমির খসরু বলেন, ‘আমাদের ইন্দো প্যাসিফিক ভিশনে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দানের বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক দেশ ও প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে অর্থনৈতিক ও কৌশলগতভাবে কাতারবদ্ধ হওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করার পাশাপাশি লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম ও রাজনীতি নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির স্বাধীনতা, সমতা এবং এবং সমৃদ্ধির ক্ষমতায়নের জন্য দেশীয় উদ্যেগ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।’

‘বিএনপি জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করতে নিবেদিত’, উল্লেখ করেন খসরু। 

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিশ্ব গৃহীত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বৈশ্বিক একটি অবাধ, উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিকের লক্ষ্যে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থাপত্যকে নতুন করে ঢেলে সাজাবে বলে আশা করা যায়। সংযোগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বঙ্গোপসাগরের শীর্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পশ্চিম ও পূর্ব গোলার্ধের পাশাপাশি ভারত মহাসাগরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আমির খসরু বলেন, ‘নিরাপত্তা সহযোগিতা, নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সম্প্রীতি, নিরাপদ নৌ চলাচল, টেকসই অর্থনীতি, মুক্ত বাণিজ্য, জলবায়ু, স্বাস্থ্য, মহামারীর মত হুমকিসমূহের মোকাবেলার পাশাপাশি একটি অবাধ, মুক্ত, উদার, গণতান্ত্রিক, ও নিরাপদ ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে ইন্দো প্যাসিফিক কৌশল গ্রহণ করছি।’