‘এপ্রিল পর্যন্ত নির্বাচন হতে পারে, সংবিধানে কোনও বাধা নেই’

আগামী বছরের এপ্রিল মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন হতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী এতে কোনও বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর)  ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিদের সঙ্গে জাতীয় সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যদি জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখেও রাষ্ট্রপতিকে বলেন, আপনি সংসদ বাতিল করে দেন। তাহলে সংবিধানে বলা আছে—মেয়াদ উত্তীর্ণের আগে যদি কোনও কারণে সংসদ ভেঙে যায়, তাহলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। জানুয়ারির ২৯ তারিখের আগে যদি ২৬, ২৭ বা ২৮ তারিখে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে এপ্রিল মাসের ২৯ তারিখ পর্যন্ত নির্বাচন হতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী এতে কোনও বাধা নেই। সময় নেই কথাটা ঠিক না।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের অনেক আগেই উচিত ছিল সবার সঙ্গে আলোচনা করা, সংলাপে অবতীর্ণ হওয়া এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।’

আদালতের রায় না মেনে সরকারের সংশোধনী বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের প্রধান কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কাছে রাষ্ট্র কিংবা জনগণের নিরাপত্তার কোনও অর্থ নেই। তার নিজের স্বার্থ, নিজের নিরাপত্তা হলো গুরুত্বপূর্ণ। সেটা রক্ষা করার জন্য পূর্ণাঙ্গ রায় বের হওয়ার আগেই তারা সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী করে ফেললেন। ২০১১ সালের ওই সংশোধনীর পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে শান্তি নেই।’

বর্তমান সরকারের উন্নয়ন গোরস্থানে আলোকসজ্জার মতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার সারা দিন বলে গণতন্ত্রের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে উন্নয়ন। মানে উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র। অনেক বড় বড় বিল্ডিং, মেট্রোরেল, আন্ডারপাস, এক্সপ্রেসওয়ে অনেক কিছু হচ্ছে। যদিও অনেক গুণ বেশি অর্থ খরচ করে তৈরি হচ্ছে। সীমাহীন দুর্নীতিও হয়েছে। এমন উন্নয়ন গোরস্থানের আলোকসজ্জার মতো। এমন উন্নয়ন আমরা চাই না।’

জনগণের মাথাপিছু ঋণের বোঝা বাড়ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। ঋণ করে ঋণ শোধ করতে হচ্ছে। ঋণ শোধ করার ক্ষমতাও আমরা হারিয়েছি। ঋণ শোধ করতে হলে আমাদের আবার ঋণ করতে হচ্ছে।’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘উদ্দেশ্য ও নিয়ত সৎ থাকলে সমস্যার সমাধান অসম্ভব কিছু নয়। বাংলাদেশের মানুষ বারবার অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। প্রয়োজনে আরও ত্যাগ স্বীকার করবে। কিন্তু তারা এর জন্য নির্ভরযোগ্য, বিশ্বস্ত নেতৃত্ব চায়। সেই নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল প্রমুখ।