২০১৮ সাল থেকে কারাগার, হাসপাতাল আর শর্তসাপেক্ষে মুক্তির সময়টিতে বাসাতেই কেটেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিন (১৫ আগস্ট)। ৬ বছর পর আজ মুক্ত পরিবেশে ৭৯ বছরে পা দিলেন ১৯৪৬ সালে (অফিসিয়াল) জন্ম নেওয়া জনপ্রিয় এই নেত্রী।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য— বিএনপির চেয়ারপারসন রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার এভার কেয়ার হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসকদের গভীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। শারীরিক অবস্থা এখন খানিক উন্নত। চিকিৎসার সঙ্গে যুক্তরা তাকে জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকেই শুভেচ্ছা-সালামে অভিনন্দিত করেছেন। অভিনন্দনের মিছিলে যুক্ত হয়েছেন অনেক নেতাকর্মীও।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলা ট্রিবিউনের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ম্যাডাম চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণেই রয়েছেন। শারীরিকভাবে একটু উন্নত বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। আজ কোনও এক সময় মহাসচিব যেতে পারেন ম্যাডামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার আজকের জন্মদিনে নতুনত্ব তেমন কিছু নেই। বিশেষ করে ২০১৬ সাল থেকে নেতাকর্মীদের আয়োজনে কেক কেটে উদযাপন করতে দেখা যায়নি। জন্মদিনের পরদিন (১৬ আগস্ট) দলের নেতাকর্মীরা দোয়া-দরুদ পড়ে মোনাজাত করেন। নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় বনানীতে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হয় ধর্মগ্রন্থপাঠও।
জন্মদিনে সাধারণত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে পরিবারের প্রায় সব সদস্যই দেশের বাইরে রয়েছেন, বলে জানানো হয়েছে বাংলা ট্রিবিউনকে।
তার কার্যালয়ের একজন বলেন, ‘যথাসময়ে যারা ছিলেন তারা সালাম দিয়েছেন, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ম্যাডাম খুশিমনে, হাসিমুখে প্রত্যুত্তর দিয়েছেন।’
‘জন্মদিনের রাজনৈতিক বার্তা’
বিএনপির চেয়ারপারসনের জন্মদিন নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে রাজনীতিতে। সদ্য ক্ষমতাহীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বরাবরই অভিযোগ ছিল— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর দিনে কেক কেটে নিজের জন্মদিন উদযাপন করেন খালেদা জিয়া। এমনকি ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট জন্মদিনকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর আদালতে মামলাও হয়েছিল।
২০১৫ সালের ১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরে কেক কাটেননি খালেদা জিয়া। ওই বছরের এপ্রিলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘জাতীয় নেতাদের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। জাতীয় নেতাদের নিয়ে বিতর্ক বন্ধ করতে হবে।’
জাতীয় নেতাদের নাম নিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। পরে ২০১৬ সালে ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলেও জাতীয় নেতাদের সম্মান করতে সব দলকে আহ্বান জানান। ২০১৬ সাল থেকে কেক কেটে উদযাপন বন্ধ করে দেন তিনবারের এই প্রধানমন্ত্রী।
খালেদা জিয়ার এই অবস্থান আরও স্পষ্ট হয় ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে খালেদা জিয়ার মন্তব্য ছিল, ‘মাননীয় আদালত, আপনিও নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, মত বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ও সমন্বয়ই হচ্ছে গণতান্ত্রিক সমাজের সৌন্দর্য, ভিন্নমত দলন ও দমন নয়, প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসা নয়, বরং ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহ-অবস্থানকে উৎসাহিত না করলে গণতন্ত্র টেকানো যায় না। আমরা সে কথা জানি, বুঝি এবং মানি। আপনি জানেন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর মধ্যে ভিন্নমত ও দাবি আদায়ের পন্থা এদেশে বারবার কতটা সহিংস হয়ে উঠেছে।’
ওই জবানবন্দিতে তিনি আওয়ামী লীগ, জামায়াত, জাতীয় পার্টির আন্দোলনের সময় কীভাবে সমুদ্রবন্দর বন্ধ, রেলস্টেশন জ্বালিয়ে দেওয়াসহ নানা প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
জন্মদিন নিয়ে নব্বই দশকের শুরু থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। জন্ম তারিখ এমনকি জন্ম সাল নিয়েও নানা তথ্য প্রচার পায় গণমাধ্যমে। এক্ষেত্রে অবশ্য এ ধরনের বিতর্ক নিরসনে বিএনপির আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ দেখা যায়নি।
দলের ওয়েবসাইট (https://bnpbd.org/) পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, খালেদা জিয়ার জন্ম সাল ১৯৪৬। ‘নন্দিত নেত্রী: খালেদা জিয়া’ শীর্ষক গ্রন্থে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপ-প্রেস সচিব সৈয়দ আবদাল আহমেদ উল্লেখ করেন, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুঁড়ির নয়াবস্তি এলাকায় তার জন্ম। গ্রন্থটির মুখবন্ধ লিখেছেন প্রয়াত অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।
দিনটি সম্পর্কে আবদাল আহমেদ লেখেন, ‘তখন শরতের স্নিগ্ধ ভোর। নতুন শিশুর আগমনে পরিবারের সবাই আনন্দিত।’
জলপাইগুড়ির শান্তি , বাংলাদেশের খালেদা
বিএনপির দলীয় সূত্র ও তার জীবনীগ্রন্থগুলো থেকে জানা যায়, খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম। তার ডাক নাম পুতুল। পারিবারিকভাবে তার আরও ডাক নাম ছিল— টিপসি, শান্তি। বাবা ইস্কান্দর মজুমদারের বন্ধু চিকিৎসক অবনীগুহ নিয়োগীই সদ্য প্রসূত কন্যাকে ‘শান্তি’ নামে সম্মোধন করেন।
পৃথিবী তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে মাত্র কয়েকদিনে পড়েছে। দিনকয়েক আগে জাপানে ঘটে গেছে আমেরিকার আনবিক বোমার হত্যাযজ্ঞ। ভারতসহ নানা দিকেই তখন শান্তি মিছিল, মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার মধ্যেই নতুন জন্ম নেওয়া শিশুকন্যার নাম হয়ে উঠলো ‘শান্তি’। পরবর্তী সময়ে মেঝ বোন সেলিনা ইসলামের রাখা ‘পুতুল’ নামটিই জড়িয়ে গেলো খালেদা জিয়ার ডাকনাম হিসেবে।
১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট অবিভক্ত ভারতবর্ষের জলপাইগুড়ির নয়াবস্তি নামে ছোট্ট শহরে বেগম জিয়ার জন্ম। যদিও তার জন্মের দিনটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে।
খালেদা জিয়ার আদিবাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায়। তার বাবার নাম ইস্কান্দর মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। তিন বোন (খুরশিদ জাহান হক চকলেট, সেলিনা ইসলাম বিউটি ও খালেদা খানম পুতুল) ও দুই ভাইয়ের (মেজর সাঈদ ইস্কান্দর ও শামীম ইস্কান্দর) মধ্যে খালেদা জিয়া তৃতীয়। এদের মধ্যে এক বোন সেলিনা রহমান, ভাই শামীম ইস্কান্দর জীবিত আছেন। দুই সন্তান তারেক রহমান পিনো ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর জননী তিনি।
শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়া তার স্বামী জিয়াউর রহমানের বধূ হিসেবেই জীবনের অর্ধেক সময় কাটিয়েছেন। ১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৪ সালের ১০ মে পার্টির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া। ওয়ান-ইলেভেনের মঈন উদ্দীন ও ফখরুদ্দীন সরকারের সময় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালে নিম্ন আদালতে পাঁচ বছরের সাজা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বিশেষ ব্যবস্থায় পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগারে তাকে রাখা হয়। এরপর ওই বছরের ১ এপ্রিল তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। পরবর্তী সময়ে নিম্ন আদালতের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
প্রায় দুই বছর পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় পারিবারিক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাসের জন্য শর্তসাপেক্ষ মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর দফা-দফায় ছয় মাস করে তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় সাবেক সরকার। গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরদিন (৬ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান বেগম খালেদা জিয়া।
এর আগে, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর কারারুদ্ধ হন তিনি। পরে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরমধ্যে দ্বিতীয় দফার দায়িত্বকাল ছিল একমাস। বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপি বিজয়ী হয়। ওই বছরই বেগম জিয়া পঞ্চম সংসদে প্রধানমন্ত্রী হন। তার নেতৃত্বেই সংবিধানে দ্বাদশ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতি থেকে সংসদীয় গণতান্ত্রিক সরকার পদ্ধতি প্রবর্তন হয়।
১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর এক মাসের জন্য ষষ্ঠ সংসদের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নের পর ওই বছরে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে যায় খালেদা জিয়ার দল বিএনপি, তিনি হন প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা।
১৯৯৯ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি, গোলাম আজমের (একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত) নেতৃত্বাধীন জামায়াতে ইসলামী ও শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোটের সমন্বয়ে গঠিত চারদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২০০১ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া। জোটে চারদল থাকলেও সরকার গঠনে বিএনপির সঙ্গে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী জামায়াতকে সঙ্গে নেন তিনি।
২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বিরোধী দলীয় নেতা হন খালেদা জিয়া। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেন তিনি। একইসঙ্গে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই সে বছর নির্বাচন থেকে বিরত থাকে। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় খালেদা জিয়া যখন কারাগারে, তখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের মধ্যে সমন্বয় করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিএনপি। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে থাকায় সেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি খালেদা জিয়া। এমনকি, এই নির্বাচনে জিয়া পরিবারের কোনও সদস্যই অংশগ্রহণ করেননি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেয়নি তার দল।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সর্বশেষ বিদেশে যান ২০১৭ সালের জুলাইয়ে, তিন মাস পর ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরেন তিনি। ওই বছরই তিনি ৩০ অক্টোবর রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করেন। সেখানে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ৪৮ ট্রাক ত্রাণ বিতরণ করেন খালেদা জিয়া। ২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট সর্বশেষ তার জন্মদিনের কেক কাটেন। ২০১৬ সালে জাতীয় নেতাদের প্রতি সর্বসম্মত শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন বেগম জিয়া।
‘নিজের সম্পর্কে খালেদা জিয়া, দেশ নিয়ে ভাবনা’
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিতে খালেদা জিয়া সিলেট সফর করেন। সিলেটে হযরত শাহজালালসহ আরও একাধিক মাজার জিয়ারত করেন তিনি। ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দলের নির্বাহী কমিটির বৈঠক করেন হোটেল লা মেরিডিয়ানে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে কারাগারে যাওয়ার আগে ৭ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া নিজে শেষ সংবাদ সম্মেলন করেন। একই মাসের শুরুতেই তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটি, বিলুপ্ত ২০ দলীয় জোটেরও সভাও করেন। ওই সময়েই তিনি তার স্বামী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন।
নিজের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে (২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর, সপ্তম পর্ব)
খালেদা জিয়া আদালতে দেওয়া জবানন্দিতে উল্লেখ করেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ বানোয়াট ও অপ্রমাণিত। আমি দৃঢ়ভাবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করছি। আমি প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন থাকার সময়ে কোনোভাবে বা কোনও মাধ্যমেই আমার পদের অপব্যবহার করিনি।’
শায়রুল কবির খান উল্লেখ করেন, বেগম জিয়া সর্বশেষ সমাবেশ করেন ২০১৭ সালে। সর্বশেষ ইফতার ও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ২০১৬।
রাজনৈতিকভাবে ২০১৭ সালের ১০ মে হোটেল ওয়েস্টিনে ‘ভিশন ২০৩০ রূপরেখা’ ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, সংসদীয় ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, রেইনবো নেশনসহ নানা বিষয়ে দলের পরিকল্পনার কথা জানান। রূপরেখার শুরুতেই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উল্লেখ করেন, ‘বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল আজ সে রাষ্ট্রের মালিকানা তাদের হাতে নাই। তাই দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে চায় বিএনপি।’
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে তার সুস্বাস্থ্য ও দ্রুত আরোগ্য কামনায় সারা দেশের উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা আহ্বান করেছে বিএনপি। দলের অনুসারীরা শুক্রবার (১৬ আগস্ট) জুমার নামাজের পর মসজিদে দোয়া মাহফিল করবে। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।